ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

প্রযুক্তি বিড়ম্বনা কাহারে কহে

আলম তালুকদার
🕐 ২:০১ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০২০

যত আছে যুক্তি, প্রযুক্তিতেই মুক্তি, স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে মিথ্যা অভিযুক্তি। এই ডিজিটাল জামানায় কেউ খালি খায়, কেউ খালি গায়, কেউ বালি খায়, কেউ আবার তালি চায়! ঐ যে প্রবাদ আছে না, ‘যত সুবিধা তত অসুবিধা’! হাতের মুঠোয় সব এখন ধরা। এই ধরায় এখন অনেকে কাঠগড়ায়, ধরছে আবার খরায়! তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ সুযোগে অনেকের বাড়তি টাকাও খরচ হচ্ছে আবার বাড়তি ঝামেলাও সৃষ্টি হচ্ছে। ৫০ বছর বয়সে এক লোক বিয়ে করেছে। বিয়ের কয়েকদিন পর বন্ধুরা জিজ্ঞেস করছে, কেমন? ভাবির ভাব কেমন? বিবাহিত জীবন কেমুন লাগিতেছে? তো বন্ধুটি জবাবে বলল, ‘ধুস শালা, আগে বুঝিতে পারিলে বিবাহ করিতাম না হে। প্রাইভেসি বলিতে কিছুই নাই! মহিলাটা যখন তখন আমার ঘরে হান্দাইয়া পড়ে’! তো যখন তখন হান্দাইয়া পড়ার যুগ হইল গিয়া ডিজিটাল যুগ! অনেক জোকস কিলবিল কিলবিল করিতেছে। কোনটা বাদে কোনটা লেখি?

এক গ্রামের ডে লেবার একটা মোবাইল কিনেছে। একদিন তার বউ বলল, মোবাইল দেন দেহি, মায়ের সাথে কথা কই। স্বামী বলল, টাকা নাই। তাতে তার বউ গেল ক্ষেপে। ও আমি কথা বলতে চাইলেই টাকা থাকে না! তখন সে কল দিল এবং বউয়ের কানে ধরল, এক মহিলা বলছে, কলটি করতে আপনার যথেষ্ট পরিমাণ টাকা নাই! এখন বিশ্বাস হইল? তো বউ একটু চিন্তা করে বলল, আইচ্ছা, তোমার কাছে টাকা নাই, আমি জানি না, ঐ বেডি জানল কেমতে? লে হালুয়া! এটা তো গ্রামের জোকস। এবার শহরেরটা কই।

স্ত্রী : সারারাত কই ছিলে?
স্বামী : আরে কঠিন বসের পাল্লায় পড়েছিলাম। পাঁচটার পর আমাকে বলল, আপনি আজকেই এই জরুরি কাজ শেষ করে বাসায় যাবেন। জটিল ফাইলের কাজের জন্য রাতে বাসায় আসতে পারি নাই। সারা রাত অফিসে!
স্ত্রী : কিন্তু তোমার ডিজিটাল রিস্ট ব্যান্ড আমার মোবাইলে রিডিং পাঠাইছে, কাল রাতে তুমি ৫০০ কেলোরি বার্ন করেছ। রাত ১টা হতে রাত ২টা পর্যন্ত তোমার হার্টবিট অনেক বেশি ছিল! এই বাক্য শুনে স্বামী বেচারা জ্ঞানহারা!
এই রে আরেকটা আইছে হে! এক স্মার্ট ব্যবসায়ী সিঙ্গাপুরে গিয়ে সত্য-মিথ্যা নিরূপণের ডিজিটাল মেশিন কিনে এনেছে। মেশিনের ওপর পা রাখলেই মেশিন সব বলে দিতে পারে। যেদিন বাসায় মেশিন ফিট করে অন করেছে ঐদিন ছেলে বাসায়। মিথ্যা কথা বললে, মেশিন অটো একটা থাপ্পড় মারে। তো ছেলেকে বলেছে, রাতে কোথায় ছিলে? ছেলে বলেছে, বন্ধুর সঙ্গে পড়তেছিলাম। বলার সঙ্গে সঙ্গে এক থাপ্পড়!
বাবা বলল, এই বয়সে মিথ্যা বলিস? আমি জীবনে মিথ্যা কই নাই। অমনি মেশিন বাপকে এক থাপ্পড়! তো ছেলের মা বলে উঠল, যেমন বাপ তেমন ছেলে! এবার মেশিনটা তাকে মারল দুই থাপ্পড়! হায় হায়! সব যায়! প্রিয় পাঠক কী বুঝিতেছেন? এইডাকে কয় ডিজিটাল প্রযুক্তির মহাবিপদ!
ডিজিটাল পরিবারও আছে। পরিবারপ্রধানের দাবি তার পরিবার ডিজিটাল পরিবার। কীভাবে? সে বলছে, ‘আমার বউয়ের নাম ‘গুগল খানম’ একটা কথার দশটা মানে করতে ওস্তাদ। ছেলের নাম ‘ফেসবুক খান’, একটা খবর সমস্ত মহল্লায় প্রচার করবে। মেয়ের নাম ‘টুইটার খান’, সমস্ত মহল্লা তাকে ফলো করে! আর আমার নাম ‘ডিজিটাল বেসামাল খান’। আমি কিছুই সামাল দিতে পারছি না হে!
প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ ছোটখাটো মিথ্যা কথা হরহামেশাই বলে যাচ্ছে। হয়তো আছে মহাখালী বলবে মগবাজার। তো এমন অবস্থায় একবার স্ত্রী তার স্বামীকে ফোন করছে, তুমি এখন কোথায়? সে বলছে, আমি গুলিস্তান। তুমি কোথায়? স্ত্রী বলছে আমি তোমার পেছনের রিকশায়। মানে? কোন জায়গায়? কেন? নিউমার্কেট। স্বামী সামনের রিকশা থেকে পেছনে তাকিয়ে দেখে আজরাইল পেছনে! মুখে বন্দুক তাক করে বসে আছে!
এসব হলো গিয়ে বাড়তি ঝামেলা বা বিড়ম্বনা। মোবাইল না থাকার যুগে মানুষ কতই না চিন্তামুক্ত ছিল। বাড়তি টেনশনে টাকার বিনিময়ে অসুখ বাড়ানোর নাম হলো গিয়া প্রযুক্তির যুগ। বাড়াইছে দুর্ভোগ, আনিয়াছে দুর্যোগ! তবে আশার কথা এই তাহা সবার জন্য প্রযোজ্য নহে। যেমনটা আকমসাচৌ বলে; হে হে, বৌ ছাড়াও চলে। চালালেই চলে, অভিজ্ঞতায় বলে! কিন্তু মোবাইল ছাড়া? চলে? চলেই না!

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper