বহুদিন পর দেখা
বরকতুল্লাহ সুজন
🕐 ২:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ২২, ২০২০
বহুদিন পর সবার সঙ্গে দেখা। কিন্তু প্রত্যেকের সঙ্গে যে প্রাণখোলা কথা হয়েছে, তা নয়। কারো সঙ্গে হয়তো বা দু’চারটা, হায়, হ্যালো, চোখের দেখা। তবু ক্লাসের পুরনো বন্ধু বা সাথীদের সঙ্গে আবার একরুমে যুথবদ্ধ হওয়ার, তাদের কাছে ঘেঁষার ভাল লাগার যে অনুভূতি, তা বলে বোঝানো যাবে না। আমার ছেলে তো খুবই অবাক। ওর মতো আমারও ক্লাসের বন্ধু আছে! তুই তোকারি সম্পর্ক আছে!
পিকনিকে রাসেলের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা আর মামুনের দরদ ভরা গান আমার কাছে ছিল সেরা উপভোগ্য। বুফের আইটেমও ছিল দারুণ। বন্ধুদের এই আসরে এখন বড় অংশীদার আমাদের পরিবারের একান্তজনেরা। বন্ধু বহর এখন বিশাল।
ক্যাম্পাস ছাড়ার পর অনেকের সঙ্গেই প্রথম দেখা। চিরচেনা হাসিমুখে দোলন জানালো তার মনের আক্ষেপের কথা। আমার বাসা বা অফিস থেকে বিএসএমএমইউ খুব বেশি দূরে নয়। এতটা কাছে থেকেও তার পাশে দাঁড়াতে না পারার দুঃখবোধ আমাকে এখনও তাড়া করছে। জিয়া হলে নোট পাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় উপকারটি আমাকে করত দোলন। তার হাসিতে আর পরামর্শে মনে একধরনের ভরসা পেতাম। পরীক্ষার আগে বারবারই তাই ছুটে যেতাম তার কাছে।
দোলনের বিপদে বন্ধুুত্বের সেই শূন্যতায় উর্মির হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা শোনার পর যেন কিছু একটা ফিরে পাই। হতে পারে সেটা উৎসাহ, অন্ধকারে মোমবাতি খুঁজে পাওয়া।
আমার বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ, আমি চরম আত্মকেন্দ্রিক। গ্রুপ ছবিই তার প্রমাণ, আমি নেই। আমি সে সময় কোথায় ছিলাম? কেউ কি বলতে পারবে? যা হোক, অভিযোগ থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে এখনও ভাবছি। তোমাদের সহযোগিতা চাই। পিকনিক আয়োজনের সঙ্গে যারা ছিল, শাহীনসহ সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। উল্লেখ্য, সম্প্রতি ছুটি রিসোর্টে বন্ধুরা এই পিকনিকের আয়োজন করে।
আরেকটা কথা, করোনা ভাইরাস থেকে সাবধান। গত কয়েকদিনে অনেকগুলো আর্টিকেল বা রিসার্চ (অংশ বিশেষ) পাগলের মতো পড়েছি। তাতে মনে হয়েছে, এই ভাইরাস পরিস্থিতি অনেক দূর গড়াবে। কোনভাবেই আমরা এ থেকে মুক্ত নই। যাদের বৃদ্ধ বাবা-মা বা শ্বশুর-শাশুড়ি আছেন, তাদের প্রতি এক্সট্রা কেয়ার নিতে হবে।
অনেকে বলছেন, বাচ্চারা এতে আক্রান্ত হয় না। আসলে ভুলু। বাচ্চারা আক্রান্ত হয়, কিন্তু তাদের মৃত্যুর হার কম। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে বাড়ি চেনাতে সবচেয়ে বড় বাহক হতে পারে আমাদের শিশুরা। তবে যেসব শিশুর আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট বা অ্যাজমা টেনডেন্সি রয়েছে, তাদের বাসার বাইরে বের না করাই ভাল। এই পরিস্থিতি কতদিনে কাটবে, তা আমরা জানি না। আমরা নিশ্চিত নই, এমন ভাইরাস মানুষের গবেষণার ফল নাকি স্বয়ং সৃষ্টিকর্তার কোন নমুনা! যা হোক, চাই প্রার্থনা, সবার সুস্থতা। জয় হোক বন্ধুত্বের। পরবর্তী আহ্বানের অপেক্ষায় থাকলাম।