ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সম্প্রদায় ও সাম্প্রদায়িকতা

খোলামত ডেস্ক
🕐 ৬:১৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২০

সম্প্রদায় শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘পরম্পরাগত ধর্মমত’ বিভাগ বা দল। আমাদের দেশে সম্প্রদায় শব্দটি সাধারণত কোনো মতবাদ, গোষ্ঠী বা ধর্মাবলম্বীদের বোঝায়, কখনো কোনো দার্শনিক সম্প্রদায়কেও বোঝায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট দর্শন বা দার্শনিককে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কোনো দার্শনিক সম্প্রদায়।

আবার ধর্মাবলম্বী বলতে বোঝায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী বা সম্প্রদায় ও মুসলমান ধর্মের অনুসারী সম্প্রদায়। তবে আমাদের দেশে শেষোক্ত অর্থে শব্দটির বহুল প্রয়োগ লক্ষণীয়। সম্প্রদায় বলতে এক জনগোষ্ঠী বোঝায়। তবে এটা এর ব্যাপক অর্থ। কিন্তু এই অর্থ এখন বিলুপ্তপ্রায়। সম্প্রদায় হচ্ছে ধর্ম অনুসারী মানুষ।

অপরদিকে সাম্প্রদায়িকতা হলো ধর্মের কারণে এক ধর্মীয় ব্যাপারকে সামনে রেখে অপর কোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপর আঘাত হানা। আর এটা ঘটে সাধারণত সংখ্যাগুরু কর্তৃক সংখ্যালঘুর উপর হামলার মাধ্যমে। ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দু কর্তৃক সংখ্যালঘু মুসলমান, খ্রিস্টান প্রভৃতির উপর আঘাত হানা। বাংলাদেশে সংখ্যাগুরু মুসলমান কর্তৃক সংখ্যালঘু হিন্দু ও অন্য সম্প্রদায়ের উপর আঘাত হানা। এ অর্থেই বর্তমানে আমাদের দেশে তথা উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িকতা শব্দটির বহুল ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। যার কার্যক্রম ও কয়েকদিন আগে সবাই লক্ষ করেছি। এবার আসি সাম্প্রদায়িকতা শব্দটি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণায়। সাম্প্রদায়িকতা একটি আধুনিক কনসেপ্ট। প্রাচীন ও মধ্যযুগে এ এটির অস্তিত্ব ছিল না। ব্রিটিশ যুগেই এ ধারণার উদ্ভব।

‘রাজতরঙ্গিনী’ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, ইনি মন্দির লুট করার জন্য কর্মচারী নিয়োগ করেছিলেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে মন্দির ভাঙার উদ্দেশ্য ধর্ম নয়, লুটপাট-রাজকোষে অর্থসঞ্চয়। অতীত ঐতিহ্যেকে স্মরণ রেখে সকল ভেদাভেদ ভুলে সকল জাতিকে নির্বিশেষে বাঙালি জাতিকে হীনম্মন্যতা পরিত্যাগ করে মাথা তুলে দাঁড়াতে হবে। সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ নয়, পরধর্মের প্রতি অসহিষ্ণুতা নয়, নয় কোনো হীনম্মন্যতা। সকল প্রকার ধর্মান্ধতা ও জাত্যাভিমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করাই বাঙালির মুক্তির একমাত্র সোপান।

শ্যামলী আক্তার অণু, খোলা কাগজের পাঠক
[email protected]

 
Electronic Paper