শ্রীমঙ্গলে বালু উত্তোলনের হিড়িক
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
🕐 ৭:২০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৯, ২০২০
চায়ের রাজধানীখ্যাত প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যে ভরপুর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর চলছে অবাধে অনাচার। পরিবেশ বিধ্বংসী অপকর্মের প্রতিকার করছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। উপজেলায় প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের হিড়িক। ফলে এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থাও বেহাল হয়ে পড়েছে। প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মিলে চিহ্নিত একটি সিন্ডিকেট বোমা মেশিন ব্যবহার করে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্যে লিপ্ত।
জানা যায়, স্থানীয় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত সরকার দলীয় কতিপয় বিপথগামী রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা মিলে চিহ্নিত একটি সিন্ডিকেট বোমা মেশিন ব্যবহার করে প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্যে লিপ্ত।
এদের ভয়ে এলাকাবাসী এত বেশি উৎকন্ঠিত যে কেউ মুখ খুলতে চাচ্ছেন না, শুধু নীরবে ফেলছেন চোখের পানি। কেউ কেউ পরিবেশ বিধ্বংসী কাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের জেলা কার্যালয় এসব ব্যাপারে দেখেও না দেখার ভান করে চলেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেশিন লাগিয়ে অবাধে চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন। সাংবাদিক আসার খবরে বালু তোলায় নিয়োজিত শ্রমিকরা তড়িঘড়ি মেশিন বন্ধ করে পালানোর পথ ধরছে।
প্রভাবশালী বালু তোলার সঙ্গে জড়িত দুই যুবক মোটরবাইক গণমাধ্যমকর্মীদের আভিযানিক দলকে ফলো করছে। ছুটে এসেছেন সাবেক এক ইউপি জনপ্রতিনিধি যিনি দাবি করলেন তিনি এসব ব্যাপারে জড়িত নয়। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য মোতাবেক, এ পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে যুক্ত রয়েছে সর্বদলীয় একটি সিন্ডিকেট।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, আমরা নিরুপায়, জনপ্রতিনিধি-প্রশাসন-পুলিশ সবাই এদের লোক এবং দুর্বৃত্তপনায় যুক্ত।
আমরা অভিযোগ নিয়ে কার কাছে যাব? প্রত্যেকটা জায়গায় সিন্ডিকেটের লোক, প্রতিকার তো পাওয়াই যায় না উল্টো অভিযোগ দিলে জীবনযাপনে বিপদ নেমে আসতে পারে, হতে পারে হয়রানিসুলভ মিথ্যা মামলা।
মৌলভীবাজার জেলা পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তা বলেন, আমরা অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। সামাজিকভাবে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষ অভিযোগ দিতে ভয় পায়। আমরা অচিরেই এ ব্যাপারে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করব।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার মাহমুদুল হক মামুন বলেন, এসব বিষয়ে আমাদের কেউ অবহিত করেনি।
যেহেতু এখন জেনেছি, পুরো উপজেলায় পরিবেশ বিধ্বংসী এ কার্যক্রম বন্ধ করতে আইনানুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করব এবং জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।