ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নদী রক্ষায় উদ্যোগ নিন

সম্পাদকীয়
🕐 ৮:২৪ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২০

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হিসেবে আখ্যায়িত হলেও বর্তমানে এ নদীর ওপরই নেমে এসেছে নানামুখী নির্যাতন। মানুষের অত্যাচারে মারা গেছে অনেক নদ-নদী। টিকে থাকা নদীগুলো বড় অংশ এখন ধুঁকছে মানুষের অবিমৃষ্যকারিতায়। নদী প্রায়ই আলোচনায় এলেও সেই অর্থে প্রতিকার হচ্ছে না বললেই চলে। সম্প্রতি উজানে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, অভিন্ন নদীর ওপর যেন অনৈতিকভাবে বাঁধ, ড্যাম, ব্যারেজ করতে না পারে সেই জন্য জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশনে স্বাক্ষর করে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে অভিন্ন নদী রক্ষায় ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান ও চীনকে সঙ্গে রাখার আহ্বান জানানো হয়। গত শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘দূষণ ও দখল মুক্ত নদী প্রবাহ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা বলেন, ইতিমধ্যে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট এক রায়ে বলেছে- নদী কোনো রাজ্যের একক মালিকানা নয়, অন্য কোনো রাজ্যকে বঞ্চিত করে কোনো নদীর ওপর কোনো রাজ্য একক অধিকার দাবি করতে পারে না। এ রায় অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে না যৌথ নদী কমিশনের পানি কূটনীতিকে আরও বেগবান করবে। অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন আলোচনায় ভারতের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান এমনকি চীনকে রাখাও জরুরি। কেননা চীন ব্রহ্মপুত্রের গতিপথ পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছে, যা ভারত বাংলাদেশ উভয়ের জন্য অশনিসংকেত। এমতাবস্থায় অভিন্ন নদীর ওপর নির্মিত বাঁধ, ড্যাম, ব্যারেজ অপসারণ ও পানি বণ্টনে ন্যায্য হিস্যা আদায়ে জাতিসংঘ পানি প্রবাহ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করে জাতিসংঘের দ্বারস্থ হওয়া সরকারের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

অনুষ্ঠানে নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দখলদারদের ভয়ে এক সময় নদী বাঁচাও আন্দোলনকারীরা আত্মগোপনে থাকত। দিন বদলে গেছে। এখন দখলবাজরা আত্মগোপনে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার এক বছরের মধ্যে নদী উন্নয়নে ভারতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। কাজেই প্রতিটা বিষয় বঙ্গবন্ধু যে কাজ করে গেছেন তা অবিস্মরণীয়। তিনি নদী নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস বর্তমান সরকার যে প্রত্যয় নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন এর ধারাবাহিকতা থাকলে অবশ্যই ভালো ফলাফল আসবে। নৌ-মন্ত্রণালয় নদীর মালিক নয়। এ মন্ত্রণালয়ের কাজ শুধু নৌ-রুট তৈরি ও উন্নয়ন করা। এখানে নদীর নিচে যে মাটি আছে সেটা ভূমি মন্ত্রণালয়ের। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ নদীগুলোর রক্ষাকারী।

নদীর মালিকানায় অনেকেই অনেকভাবে আছেন। নদী দখল করে বাণিজ্য বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। সেগুলোকে যদি আমরা অপসারণ করি তাহলে দেশ এক ধরনের সংকটের মধ্য পড়বে। এ প্রধানমন্ত্রী একটি টাস্কফোর্স গঠন করে দিয়েছেন। দেশে সবখাতেই গবেষণার বিষয়টি দুর্বল ছিল। ফলে ন্যায্য হিস্যা আদায় করা যায়নি। বর্তমান সরকার গবেষণার দিকে জোর দিয়েছে। এ জন্য নদী গবেষণায় সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হচ্ছে। নদীমাতৃক এ দেশে অবশ্যই নদীগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে কাজ করছে। নদী রক্ষায় সংশ্লিষ্টরা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলেই আমরা মনে করি। পরম মমতায় যে নদী বেষ্টন করে রেখেছে বাংলাদেশকে সেই নদীকে রক্ষা করতে হবে নিজেদের স্বার্থেই!

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper