যমুনেশ্বরী নদীতে ধানচাষ
বিপ্লব হোসেন অপু, তারাগঞ্জ (রংপুর)
🕐 ২:৫৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২০
বর্ষা মৌসুমে হাজারো মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে যায় রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার যমুনেশ্বরী নদীতে। পানি শুকিয়ে এখন সেই নদী কৃষকের আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে।
বর্ষাকালে পানি ও ফসলি জমির আদ্রতা ধরে রাখে একমাত্র খাঁরুভাজ, চিকলী ও যমুনেশ্বরী নদী। প্রায় ৩৭ কিলোমিটার এ উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে নদীগুলো। বর্ষা মৌসুমে প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন হয়ে থাকে এ নদীগুলো দিয়ে। মাত্র দুই এক মাস পেরিয়ে গেলে হয়ে পড়ে মরুভূমি। বিগত কয়েক বছর ধরে নদী শুকিয়ে যাওয়ায় বোরো ধান, বাদাম, সরিষা, আলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলুসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করছেন স্থানীয় কৃষক।
অথচ এ নদী ছিল এক সময় তারাগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে নৌপথে বিভিন্ন জেলার একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা। সেই খর স্রোতে নদী এখন শুকিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে।
ঘনিরামপুর গ্রামের কৃষক আনারুল ইসলাম বলেন, নদীর পাশে জমি আছিল। হামার জমি নদীত ভাঙ্গি গেইছে, এখন চর হইছে। সেই চরত মিষ্টি কুমড়া আবাদ করছি। উন্নত জাতের কুমড়ার খুব ভালো ফলন হইছে।
হাজিপুর গ্রামের মোকলেছার রহমান বলেন, নদী হামার এখন আবাদের মূল হয়া গেইছে। গম ভুট্টাসহ সবজিও বাম্পার ফলন হয়ছে।
এলাকাবাসী জানান, জলবায়ুর পরিবর্তন আর প্রাকৃতিক বিরূপ প্রভাবের কারণে নদীটির বাস্তব চিত্র সবুজে ঘেরা ফসলের মাঠে পরিণত হয়েছে। আর সেই চর থেকে কৃষক সোনার ফসল ঘরে তুলছেন।
রহিমাপুর চাকলা খেয়াঘাটের প্রবীণ মাঝি আবজারুল ইসলাম বলেন, এ নদীতে এক সময় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় নৌকায় চড়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসতেন ব্যবসায়ীরা। আজ সেই নদী মরা খাল। নদীর পানি দিয়ে এক সময় বোরো চাষাবাদ হতো। এখন সেসব শুধুই স্মৃতি। নদীকে বাঁচাতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারিভাবে নদী খননের মধ্য দিয়ে আবারও ফিরিয়ে আনতে হবে নদীর সেই নাব্য ও ভরা যৌবন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অশোক কুমার বলেন, নদীর বুকজুড়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হেক্টর বোরো ধান, সরিষা, আলু, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলুসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হয়েছে।