ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নজরুল মানস

এহসান বিন মুজাহির
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, মার্চ ১২, ২০২০

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। আবির্ভাব ধূমকেতুর মতো। কাজী নজরুলকে চেতনা ও জাগরণের কবি বলা হয়। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে শুধু উন্নত ও সমৃদ্ধই করেননি, বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিতও করেছেন। ১৮৯৯ সালের ২৫ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। মৌলিক কাব্য-প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন বলেই এখনও তিনি যুগপ্রবর্তক কবি হিসেবে স্বীকৃত। ইসলামী মরমি কবিতা, অসংখ্য গজল, গান, হামদ-নাত আজও পাঠক-শ্রোতাকে সমভাবে আপ্লুত করে রাখে। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল যে বিশাল সাহিত্যভাণ্ডার রচনা করেছেন তার তুলনা বিরল।

নজরুল শুধু শিল্পী-সুরকার, গীতিকার, কবি, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, শিশুসাহিত্যিক, সম্পাদক ও আপসহীন সৈনিকই নন। তিনি ছিলেন সেকালের শক্তিধর এক কলমযোদ্ধা। তার লেখায় ফুটে উঠেছে মানুষের চাওয়া-পাওয়া। কবি তার ক্ষুরধার লেখার মাধ্যমে অন্যায়, জুলুম ও অত্যাচারে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। যা ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তি ও তাদের অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে ছিল বজ্রের মতো কঠিন, হীরার চেয়ে ধারালো। তিনি উপমহাদেশের মজলুম মানুষকে সরাসরি ব্রিটিশের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন। কলমযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার আহবান জানিয়েছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম বাঙালি কলমসৈনিক যিনি উচ্চারণ করেছিলেন=- ‘কারার ঐ লোহ কপাট/ভেঙে ফেল কর রে লোপাট/রক্ত জমাট/শিকল পূজায় পাষাণ বেদি/ওরে ও তরুণ ঈশান/বাজা তোর প্রলয় বিষাণ/ধ্বংস নিশান/উড়ুক প্রাচীর/প্রাচীর ভেদি।

নজরুলই পরাধীনতার শিকল ভেঙে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছেন জাতিকে। তার জাগরণী ও বিদ্রোহী কবিতা- লাথি মার ভাঙরে তালা/যত সব বন্দী-শালায়/আগুন জ্বালা ফেল উপাড়ি।

এই শিকল পরা ছল মোদের এই শিকল পরা ছল/এই শিকল পরেই শিকল তোদের করব রে বিকল। বল বীর, চির উন্নত মম শির। বা মহাবিদ্রোহী রণক্লান্ত/আমি সেই দিন হবো শান্ত, এমন সাহসী কাব্য লেখার মাধ্যমে দেশবাসীকে জাগিয়েছেন। পরাধীনতা, শোষণের কবল থেকে জাতিকে প্রথম স্বাধীন ও মুক্ত হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি প্রত্যয়ী ও বলিষ্ঠ লেখার মাধ্যমে মানুষকে মুক্তিসংগ্রামে অনুপ্রাণিত করেছেন, জাগ্রত করেছেন জাতীয়তাবোধ। তার কলম শাসকের অস্ত্রের চেয়ে বেশি শক্তিমান ছিল। ছিলেন মানবতার কবি। অবদমিত, ষড়যন্ত্র ও হিংসায় আক্রান্ত আত্মবিস্মৃতি জাতিকে আগে কেউ এই আহবান জানাননি। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম।
চলবে...

 
Electronic Paper