টাইম পাস প্রেমিক
সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান
🕐 ১:৪২ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২০
রাশেদ কিছুদিন পরপর ছ্যাঁকা খায়। এটা তার জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। সে ছ্যাঁকার দাগে দগ্ধ হয়ে ফেসবুকে দার্শনিক টাইপের হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাস দেওয়া শুরু করে। তখন কোনো না কোনো মেয়ে এসে তার দগ্ধ হৃদয়ে ভালোবাসার মলম লাগায়। কিছুদিন পর সে মেয়েটিও ছ্যাঁকা দিয়ে রাশেদের হৃদয় পুনরায় দগ্ধ করে চলে যায়। মন থেকে একটি মেয়েও রাশেদকে ভালোবাসেনি। তাই ফেসবুকে প্রেম আবার ফেসবুকেই ব্রেকআপ।
এই তো সেদিনের ঘটনা। ফেসবুকে এঞ্জেলা জেরিন নামের এক সুন্দরীর সঙ্গে রাশেদের প্রেম হয়। যখন ব্রেকআপ পিরিয়ড চলে, তখন সে তার মতোই হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাস দেওয়া মেয়েদের স্ট্যাটাসে সমানে লাইক ও কমেন্টস দিতে থাকে। দেখা যায়, ওই মেয়েদের মধ্যে কেউ না কেউ রাশেদের হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাসেও লাইক ও কমেন্টস করা শুরু করে। রাশেদ তখন ইনবক্সে গিয়ে টুকটাক কথাবার্তা বলার চেষ্টা করে। এভাবেই জেরিনের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রপাত।
টুকটাক কথা বলতে বলতে একপর্যায়ে রাশেদ ও জেরিন রাত জেগে দুজনের মনের কষ্টগুলো ইনবক্সে শেয়ার করতে থাকে। জেরিন সদ্য তার প্রেমিকের সঙ্গে ব্রেকআপ করেছে আর রাশেদ খেয়েছে মারিয়ার কাছে ছ্যাঁকা। এসব কষ্টের কথা বলতে বলতে এক সময় দুজনেই দুজনের সমবেদনার সঙ্গী হয়। একে অপরকে মানসিক সাপোর্ট দিতে গিয়ে হৃদয়ের টান অনুভব করে। একদিন রাশেদ প্রপোজ করে আর সেই প্রপোজে সাড়া দেয় জেরিন। শুরু হয় রাশেদ ও জেরিনের প্রেমের নতুন অধ্যায়।
প্রেম ঠিকমতো জমে ওঠার আগেই পুরনো প্রেমিকের আবির্ভাব ঘটে। সে তার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলে জেরিন সব অভিমান ভুলে যায়। সেই সঙ্গে ভুলে যায় ফেসবুকে নতুন প্রেমিক রাশেদের কথা।
শুরু হয় ফেসবুকে রাশেদকে এড়িয়ে চলা আর পুরনো প্রেমিকের সঙ্গে চুটিয়ে গল্প করা। এতেই লেগে যায় রাশেদ ও জেরিনের দ্বন্দ্ব। তখন জেরিন রাশেদকে জানিয়ে দেয়, সে শুধুই তার একজন ভালো বন্ধু ছিল। তবে এতেও সমস্যার সমাধান না হলে শেষ মুহূর্তে জেরিন ফেসবুকে রাশেদকে ব্লক করে সম্পর্কের ইতি টানে।
এভাবে প্রায় প্রতিটি মেয়ে ফেসবুকে রাশেদের সঙ্গে ব্রেকআপ করেছে। রাশেদের মনে একটাই কষ্ট- প্রতিটি মেয়েই তাকে ‘টাইম পাস প্রেমিক’ হিসেবে ব্যবহার করেছে। সে চায়, তার জীবনে একটি রিয়েল প্রেম আসুক। টাইম পাস প্রেমিক থেকে কোনো একটি মেয়ের জীবনে সে রিয়েল প্রেমিক হওয়ার লক্ষ্যে রাশেদ এখনো ফেসবুকে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। মনে যতই ছ্যাঁকার দাগ লাগুক, এই দাগ থেকেই যদি ভালো কিছু বের হয়ে আসে, তবে ছ্যাঁকা খাওয়াই ভালো!
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228