ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ধনবাড়ী নওয়াব প্যালেস

বিবিধ ডেস্ক
🕐 ১২:৪৩ অপরাহ্ণ, মার্চ ০৪, ২০২০

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী জমিদার বাড়ি বা নওয়াব প্যালেস বর্তমানেও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। এটি বাংলাদেশের একমাত্র ঐতিহাসিক স্থাপনা যা বর্তমানে রিসোর্ট হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আগত অতিথিরা নবাবদের তৈজসপত্র ব্যবহারের সুযোগ পান। জমিদার নেই, জমিদারি নেই কিন্তু চুন-সুড়কির নওয়াব প্যালেস ঐশ্বর্যে ও ঐতিহ্যে ঠিকই আজও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

অপূর্ব স্থাপত্যকর্মের কারণে জমিদার বাড়িটি পরিণত হতে থাকে পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানে। তাই নবাবের উত্তরাধিকারীরা জমিদারবাড়িতে গড়ে তোলেন পিকনিক স্পট। সৈয়দ হাসান আলী রয়্যাল রিসোর্ট হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে এটি। রিসোর্টটি দেখাশোনার দায়িত্বে আছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লাইট হাউস গ্রুপ।

বংশাই ও বৈরান নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই প্রাচীন জমিদার বাড়িটি অপূর্ব স্থাপত্যশৈলী এবং কারুকার্যে সত্যিই মনোরম এবং মনোমুগ্ধকর। তবে রিসোর্ট তৈরির পর নবাব প্যালেসে বেড়েছে চাকচিক্য এবং আধুনিকতা। চার গম্বুজবিশিষ্ট অপূর্ব মোগল স্থাপত্যরীতিতে তৈরি এই শতাব্দী প্রাচীন নবাব প্যালেস।

পুরো নবাব মঞ্জিল বা নবাব প্যালেসটি প্রাচীরে ঘেরা। প্রাসাদটি দক্ষিণমুখী এবং দীর্ঘ বারান্দাসংবলিত। ভবনের পূর্বদিকে বড় একটি তোরণ রয়েছে। তোরণের দুই পাশে প্রহরীদের জন্য রয়েছে দুটি কক্ষ। তোরণটি জমিদার নওয়াব আলী চৌধুরী ব্রিটিশ গভর্নরকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য নির্মাণ করেন।

প্রাচীরঘেরা চত্বর অংশে আবাসিক ভবন দুটি ছাড়া আরো আছে ফুলের বাগান, চিড়িয়াখানা, বৈঠকখানা, নায়েবঘর, কাচারিঘর, পাইকপেয়াদা বসতি এবং দাস-দাসি চত্বর। দর্শনার্থীদের জন্য প্রাসাদের ভেতরের বেশ কয়েকটি কামরা ঘুরে দেখার সুযোগ আছে। বারান্দাতেও শোভা পাচ্ছে মোগল আমলের নবাবি সামগ্রী, সেগুলো ছুঁয়েও দেখা যাবে! মোগল আমলের আসবাবপত্র মুগ্ধ করবে।

প্যালেসটির পাশেই রয়েছে ৩০ বিঘার বিশালাকার দীঘি, যার কুলকিনারা খুঁজে পাওয়া দায়। সেখানে দর্শনার্থীদের ঘোরার জন্য রয়েছে দুটি সাম্পান। নবাবি কায়দায় পুরো রিসোর্ট ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ির ব্যবস্থা।

রিসোর্টটির আরেক আকর্ষণ নবাব মসজিদ। রয়েল রিসোর্টের ঠিক পাশেই রয়েছে ৭০০ বছরের পুরনো এক মসজিদ। মোগল স্থাপত্যের নিদর্শন এই মসজিদের মোজাইকগুলো এবং মেঝেতে মার্বেল পাথরে নিপুণ কারুকার্য অসাধারণ। মসজিদটির পাশে একটি কক্ষ রয়েছে, যা নবাব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীর মাজার।

১৯২৯ সালে নবাবের মৃত্যুর পর থেকে এখানে ২৪ ঘণ্টা কোরআন তিলাওয়াত হচ্ছে, যা এখনো এক মিনিটের জন্য বন্ধ হয়নি। বর্তমানে সাতজন কারি নিযুক্ত রয়েছেন। তারা প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর একেকজন কোরআন তিলাওয়াত করে থাকেন।

অর্ধবিঘা আয়তনের অনুচ্চ প্রাচীরবেষ্টিত একটি প্রাচীন কবরস্থান রয়েছে এখানে। আর এর পাশেই রয়েছে একটি মসজিদ। ধারণা করা হয় ইস্পিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এ মসজিদে একসঙ্গে ২০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদ অভ্যন্তরে মোগল আমলের তিনটি ঝাড়বাতি শোভা পাচ্ছে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

Electronic Paper