করোনা ভাইরাস
থামছে না মৃত্যুর মিছিল, চীনে মৃত বেড়ে ২৭৮৮
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
🕐 ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
চীনে প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২ হাজার ৭৮৮ জনে। এছাড়া দেশটিতে একদিনে ৩২৭ জন সংক্রমিত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮ হাজার ৮২৪ জনে। অথচ এর আগের দিন এ রোগে মৃত্যু হয়েছিল ২৯ জনের। গত এক মাসের মধ্যে একদিনে সেটিই ছিল সর্বনিম্ন মৃত্যুর হার।
চীনা জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের বরাত দিয়ে শুক্রবার আলজাজিরার খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে টোকিও অলিম্পিক ঘিরে অনিশ্চয়তা আরও বাড়ল। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, শীঘ্রই করোনা আতঙ্ক না কমলে পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়া হতে পারে ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে বড় এই ইভেন্টটি।
এছাড়াও করোনাভাইরাস এশিয়ার অন্যান্য দেশ এমনকি আফ্রিকায়ও ছড়িয়ে পড়ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলে নতুন করে ২৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে ২০২২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আর আফ্রিকার সাব সাহারান দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে নাইজেরিয়ায়ও করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানায়, চীন থেকে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে পড়েছে বিশ্বের ৫০টি দেশে। এছাড়া চীনসহ সারা বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮২ হাজার এবং মোট মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৮০০ জনেরও বেশি।
এদিকে দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ঝং নানশান বলেছেন, ‘আমরা নিশ্চিত যে এপ্রিলের শেষের দিকে এ মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
চীনের ন্যাশনাল ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক এ পরিচালক আরও বলেন, প্রথম দিকে যদি কর্তৃপক্ষ জোরালোভাবে কাজ করত তাহলে এ রোগের সংক্রমণের খুব বেশি হতো না। চীনে যখন এই প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল তখন ভাইরাসটির উদ্ভব নাও হতে পারে।
এক তথ্যে জানা যায়, চীনের বাইরে মারা গেছে মোট অর্ধশতাধিক। এর মধ্যে ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালিতে বেশি মারা গেছে। এছাড়া জাপান, হংকং ও ফ্রান্স, ফিলিপাইন এবং তাইওয়ানেও এ প্রাণঘাতী ভাইরাসে মারা যাওয়ার রেকর্ড আছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে মারা গেছে ৪০ জন।
এদিকে জাপানি প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে আক্রান্ত হয়েছে ৬৯১ জন এবং মারা গেছে চারজন। অপরদিকে জাপানের বিভিন্ন স্থানে আক্রান্ত হয়েছে ১৭১ এবং মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানেই এই ভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে এখন পর্যন্ত ১৩৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯ জন।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানেই এই ভাইরাসের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। সেখানে এখন পর্যন্ত ১৩৯ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯ জন।
অপরদিকে, সিঙ্গাপুরে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৩, যুক্তরাষ্ট্রে ৬০, থাইল্যান্ডে ৪০, বাহরাইনে ৩৩, অস্ট্রেলিয়ায় ২৩, মালয়েশিয়ায় ২২, ফ্রান্সে ১৮, জার্মানিতে ১৮, কুয়েতে ১৮, ভিয়েতনামে ১৬, যুক্তরাজ্যে ১৩, ম্যাকাউতে ১০, কানাডায় ১০, স্পেনে ৮, ইরাকে ৫, ক্রোয়েশিয়ায় ৩, ভারতে ৩, অস্ট্রেলিয়ায় ২, ফিনল্যান্ডে ২, ইসরায়েলে ২, ওমানে ২, রাশিয়ায় ২, সুইডেনে ২ এবং আফগানিস্তানে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এছাড়া হংকংয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৯১ এবং মারা গেছে ২ জন। তাইওয়ানে ৩১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে একজনের। ফিলিপাইনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ এবং মৃত্যু ১, আলজেরিয়ায় আক্রান্ত ১, বেলজিয়ামে ১, কম্বোডিয়ায় ১, মিসরে ১, জর্জিয়ায় ১, গ্রিসে ১, লেবাননে ১, নেপালে ১, উত্তর মেসিডোনিয়ায় ১, নরেওয়েতে ১, রোমানিয়ায় ১, শ্রীলঙ্কায় ১ এবং সুইজারল্যান্ডে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাসের আতঙ্কে সৌদি আরবে ওমরাহ যাত্রী ও মসজিদে নববী ভ্রমণকারীদের জন্য দেশটিকে প্রবেশ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, সৌদি আরবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় যারা ওমরাহ করতে চাচ্ছেন বা মদিনায় মসজিদে নববীতে যেতে চাচ্ছেন তাদের প্রবেশাধিকার অস্থায়ীভাবে স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক আরব নিউজ এবং সৌদি গেজেট দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করে।
এছাড়া পাকিস্তানেও করোনাভাইরাসে দু’জন আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জনস্বাস্থ্য উপদেষ্টা বুধবার এক টুইট বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।