ক্যাসিনো খালেদের নিয়ন্ত্রণেই আন্ডারওয়ার্ল্ড
তোফাজ্জল হোসেন
🕐 ১০:২৮ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
তিনি আছেন কারাগারে, নিয়মিত হাজির করা হচ্ছে আদালতে, প্রকাশ্যে রাজনীতি বা কোনো কর্মকাণ্ডই চালাতে পারছেন না, কিন্তু অন্তরালে থেকেই সবকিছুর ওপর নিজের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি ধরে রেখেছেন। তিনি যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের সময় গ্রেফতার হওয়া খালেদকে রাজধানীর রামপুরা, খিলগাঁও, সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিল ও রমনা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে বিদেশে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী মানিক ও জিসান এবং কয়েকজন ব্যবসায়ী ব্যাপক সহযোগিতা করেছেন। গ্রেফতারের পরপর তিনি কিছুটা বেকায়দায় পড়লেও এখন পুরো সাম্রাজ্য ফিরে পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, খালেদের ক্যাডারদের হাতে রয়েছে শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। এর মধ্যে ৪টি অত্যাধুনিক অস্ত্র একে-২২এস। অধিকাংশ অস্ত্রই চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী একটি রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাবর চট্টগ্রামে জোড়া খুনসহ ১৬টি মামলার আসামি।
হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের বন্ধুর রাজধানীর পল্টনের ‘ন’ অদ্যাক্ষরের একটি অস্ত্রের দোকান থেকেও খালেদের কাছে অস্ত্র যেত। ওই অস্ত্র দোকানের মালিকের অস্ত্র ছাড়াও মানি এক্সচেঞ্জ, গাড়ির শোরুম ও জমি বেচাকেনার ব্যবসা রয়েছে। ওই মানি এক্সচেঞ্জে মাধ্যমে ক্যাসিনোর টাকা অবৈধভাবে বিদেশে পাঠানো হতো। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেফতার হওয়ার পরপরই ‘ই’ আদ্যাক্ষরের আলোচিত ওই ব্যবসায়ী দেশ থেকে পালিয়ে যান। সম্প্রতি দেশে ফিরে এসে খালেদের সহযোগীদের সংগঠিত হতে সহায়তা করেছেন।
জানা যায়, কেরানীগঞ্জ জেলে দেখা করতে আসা আত্মীয় বা সহযোগীদের মাধ্যমে নির্দেশনা দিত খালেদ। যদিও খালেদকে ইতোমধ্যে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, খালেদের ঘনিষ্ঠ একাধিক সহযোগীর জবানবন্দি এবং অনুসন্ধানে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
খালেদের বিরুদ্ধে আদালতে দেওয়া অস্ত্র মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, খালেদ দীর্ঘদিন মতিঝিল এলাকার ফকিরেরপুলে ইয়ং মেনস ক্লাবসহ বেশ কয়েকটি ক্লাবে জুয়া, ক্যাসিনো ও মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। খিলগাঁও-শাহজাহানপুর হয়ে চলাচলকারী গণপরিবহন থেকে নিয়মিত মোটা অঙ্কের চাঁদা আদায়, খিলগাঁও রেলক্রসিংয়ে প্রতি রাতে শক্তির দাপট দেখিয়ে মাছের হাট বসিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা ছিল তার নৈমত্তিক কাজ। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর যেগুলো আবারও শুরু হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি ঈদে শাহজাহানপুর রেল কলোনি মাঠ, মেরাদিয়া ও কমলাপুর পশুরহাট নিয়ন্ত্রণ করত খালেদ। এলাকার সরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশন, ক্রীড়া পরিষদ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, যুব ভবন, কৃষি ভবন, ওয়াসার ফকিরাপুল জোনসহ সব প্রতিষ্ঠানে তার মালিকানাধীন ভূঁইয়া এন্ড ভূঁইয়া নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে একচ্ছত্রভাবে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করত এই খালেদ।
সূত্র জানায়, খালেদের প্রধান সহযোগীর নাম বেলাল হোসেন কিসলু ও রইছ উদ্দিন। ২০০৫ সালে বনশ্রীর ক্রিস্টাল ক্যাবল নেটওয়ার্কের অফিসে সংঘটিত মিথুন এবং টিটু খুনের অন্যতম আসামি তারা। রনি ও সজিব নামের দুই ভাড়াটে কিলারও এই জোড়া হত্যা মামলার আসামি। ক্যাবল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০১৪ সালে মগবাজারে মাহবুবুর রহমান রানা হত্যার সঙ্গে জড়িত রইছ, রনি এবং সজিব। ২০১৩ সালে আলোচিত যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যা মামলার আসামী কাইল্যা আমিনুল, অঙ্কুর ও উজ্জ্বল মোর্শেদকে আশ্রয় দিয়েছে খালেদ। তাদের কাছেও খালেদের অনেক অস্ত্র রয়েছে। ২০১০ সালে মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালেরওকে