ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ঘন ঘন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে বাড়ছে বিপদ

স্বাস্থ্য কুশল ডেস্ক
🕐 ৪:৩১ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০

জীবন রক্ষাকারী অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার বিপদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। গরু, ছাগল ও মুরগির মাংস এবং মাছ, খাদ্যের তিন উৎস থেকেই মানুষ নিজের অজান্তে শরীরে গ্রহণ করছে অ্যান্টিবায়োটিক। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত না খাওয়া এবং চিকিৎসকের অজান্তে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন রোগীর দেহের ব্যাকটেরিয়াকে রেজিস্ট্যান্স করে ফেলছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবক্ষেত্রে পরীক্ষা করে অবিলম্বে রোগীর দেহে প্রয়োজনীয়তা থাকলেই কেবল অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার নিয়ম চালু করতে হবে। তা না হলে রোগীর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ না করার যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না। প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিতে বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও অনেকেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করছেন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়াই।

গবেষণায় আরও দেখা যায়, একটি প্রেসক্রিপশনে এক ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে ৭৪ ভাগ রোগীকে। একাধিক ধরনের দেওয়া হয়েছে ২৫ ভাগ প্রেসক্রিপশনে। ৬৬ ভাগ প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার ক্ষেত্রে পুরো তথ্য ছিল। ৫৭ ভাগে এর খাওয়ার নিয়ম লেখা ছিল এবং ৮৩ ভাগ প্রেসক্রিপশনে কোনও পরীক্ষা ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক আকরাম বলেন, কোম্পানিগুলো অ্যান্টিবায়োটিকের বিক্রি বাড়িয়ে মুনাফার চেষ্টা করে। কোম্পানির লোকজন চিকিৎসকদের বাড়িয়ে বাড়িয়ে অনেক তথ্য দেয়, এতে করে চিকিৎসকরা রোগীকে বেশি অ্যান্টিবায়োটিক দেন। আর এখন যেহেতু মানসম্পন্ন চিকিৎসক ছাড়াও অনেক কোয়াক (হাতুড়ে) চিকিৎসক আছেন। অ্যান্টিবায়োটিক সাতদিন খেলে রেজিস্ট্যান্স হয় না। কিন্তু কোয়াকরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ফলো করে অ্যান্টিবায়োটিক দিলেও দুই দিন খাওয়ানোর পর জ্বর ভাল হয়ে গেলে তা বন্ধ করে দেন। এর ফলে সঙ্গে সঙ্গে রোগীর শরীর রেজিস্ট্যান্স হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, যে কেউ ফার্মেসিতে গিয়ে যেকোনও অ্যান্টিবায়োটিক কিনতে পারেন। অথচ অনেক রোগে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনও প্রয়োজন নেই। যেমন- গলা ব্যথার শতকরা নব্বই ভাগ ভাইরাস। রোগী হয়ত তিনদিন খাওয়ার পর গলা ব্যথা কমে গেলো। এই তিন দিনে ভাল যে ব্যাকটেরিয়া ছিল সেগুলো মারা গেলো। আর খারাপ ব্যাকটেরিয়ার জন্ম হলো।

সরকারি হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক দুই তিন দিনের বেশি দেওয়া হয় না। তিনদিন খেয়ে অনেকে ভালো হয়ে গেলে পরের ওষুধ কেউ নিতে আসে না। অ্যান্টিবায়োটিক শুধু চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন দেওয়ার কথা থাকলেও কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডাররাও (সিএইচসিপি) সাত ধরণের অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছেন। এটার কারণেও ক্ষতি হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ফ্লেমিং ফান্ড নামে ইংল্যান্ডের একটি সংস্থা আসছে। তারা আমাদের এই বিষয়টি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। আমরা চেষ্টা করছি জনগণ যেন সচেতন হন, তারা যেনও বিনা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক না খান। আবার, ওষুধের দোকানও যেন যার তার কাছে অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি না করে। জনগণকে বুঝতে হবে, ইচ্ছে মতো অ্যান্টিবায়োটিক খেলে শেষ পর্যন্ত নিজেরই ক্ষতি।

 
Electronic Paper