ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বন্ধুত্বের একুশ বছর

ওয়ালিয়ার রহমান
🕐 ৪:১৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০

পৃথিবীতে মধুর সম্পর্কগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বের সম্পর্ক অন্যতম। বন্ধুত্ব এমন এক ধরণের সম্পর্ক, যেখানে দুটো ভিন্ন ধর্মী মানুষ একে অপরের প্রিয় হয়ে ওঠে। সুখ-দুঃখের গল্প থেকে শুরু করে, হাসি-ঠাট্টা সব কিছুই বন্ধুদের সঙ্গে মানায়। বন্ধুরা মিলে একসাথে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, দুষ্টুমি, সৃজনশীল আড্ডা মনকে আনন্দিত করে তোলে। একজন ভালো বন্ধু জীবনে ভালো অভিভাবকও হতে পারে। যে তাকে কঠিন সময়ে, সঠিক পথ দেখিয়ে দিতে পারে। যদিও বর্তমানে এমন বন্ধু পাওয়া দায়। কিন্তু নেই সেটাও বলা যায় না।

 

বন্ধুত্বের মানে কী? এর কি কোনো সংজ্ঞা আছে? ক্যাম্পাস বন্ধুত্ব কি অন্য সম্পর্কের চেয়ে ভিন্ন? স্বভাবতই একেকজন প্রশ্নগুলোর উত্তর একেকভাবে দিবেন। বলা হয়ে থাকে পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী সম্পর্ক হচ্ছে বন্ধুত্ব।

বন্ধু জীবনে অক্সিজেনের মতো। যে কথা কাউকে বলা যায় না, সেই গোপন কথার ঝাঁপি নিশ্চিন্তে খুলে দেয়া যায় বন্ধুর সামনে। বন্ধু কখনো শিক্ষক, কখনো সকল দুষ্টুমীর একমাত্র সঙ্গী। বন্ধু মানে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস আর ছেলেমানুষী হুল্লোড়। সব ধরণের মানবিকতা বোধ ছাপিয়ে বন্ধুত্বের আন্তরিকতা জীবনের চলার পথে অন্যতম সম্পদ। আবার সামান্য ভুল বোঝাবুঝি থেকে সহসাই বন্ধুত্বের সম্পর্কে ফাটল ধরতে দেখা যায়! যে ব্যাপারটা সামান্য আলোচনার মাধ্যমেই মিটে যেতো, তাকে বছরের পর বছর মনের মধ্যে পুষে রেখে বন্ধুত্ব নষ্ট হবার দৃষ্টান্তও নিতান্ত স্বল্প নয়। বন্ধুত্বে বিশ্বাস রাখুন।

এরিস্টটলের মতো করে বলতে হয় বন্ধুত্ব মানে বিশ্বাস, বন্ধুত্ব মানে পরস্পরের মাঝে সহযোগিতা, বন্ধুত্ব মানে বিপদে পাশে থাকা, সুখে-দুঃখে এক থাকা। জীবনের কোনো বাঁকে নয়, বন্ধুত্বের ব্যাপ্তি সারাজীবন।

উইলিয়াম শেক্সপিয়ার বলেছেন, ‘কাউকে সারাজীবন কাছে পেতে চাও? তাহলে প্রেম দিয়ে নয়, বন্ধুত্ব দিয়ে আগলে রাখো। কারণ প্রেম একদিন হারিয়ে যাবে কিন্তু বন্ধুত্ব কোনোদিন হারায় না।’

আসলে জীবনের বিভিন্ন স্তরে বন্ধুত্বের ধরণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। স্কুল-কলেজের বন্ধুত্ব আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধুত্ব একই রকম হয় না।
আমরা ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের ১৯৯৮-৯৯ ব্যাচের বন্ধুরা-বন্ধুত্বের বন্ধন আরও সুদৃঢ় করতে গত ৭ ফেব্রুয়ারি ডাকসু ক্যাফেটেরিয়ায় দ্বিতীয় বারের মতো মিলিত হয়ে ছিলাম। এটা ছিল বন্ধুত্বের একুশ বছরপূর্তি উৎসব। বন্ধুদের অনেকেই কষ্ট করে এ আয়োজন করে। মুক্তাদ্দির, মামুন, রিপন, আসাদ, সুমন রাজিব, মান্না, শাহীনুর, চঞ্চল, মৃদুল, আনোয়ার, পপি, হ্যাপি, মেঘলা, রহিমা, নূরজাহান, দৌজ্জা, দিদার, হাফিজ, শিমুল, সুমি, মহসীনা, টিপু, রিফাত, নাহিদ, অপু, স্বপন, সেলিম, আনিচ, জেবু, সোবান খন্দকার, তনু, জাকির, লিটন, জাকির, মোস্তফা, শামীমসহ প্রায় তিনশ বন্ধু অংশ নিয়ে ছিল এই প্রাণের মিলনমেলায়। অনেক বন্ধু ঢাকার বাইরে থেকেও এসেছিল এই মিলনমেলায়। দিনটি স্মৃতিতে ধরে রাখতে হৈ-হুল্লোড়, গান বাজনা, র‌্যাফেল ড্র, ফটোসেশনসহ নানামুখী কার্যসম্পাদিত হয়। বর্ণিল আনন্দ-উচ্ছ্বাসে, রঙে-রূপে এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয় বন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যরা। পালন করে বন্ধুত্বের একুশ বছর। ক্যাম্পাস জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করে বন্ধুরা। এই স্মৃতির ভাগিদার হতে পেরেছিলাম আমি নিজেও। দিনটি স্মৃতির পাতায় রয়ে যাবে চিরদিন।

আসলে প্রকৃত বন্ধু কখনই বদলায় না। তাই জীবনের ভালো বন্ধুগুলোকে খুঁজে বের করে তাদের পাশে থাকা দরকার। প্রকৃত বন্ধুগুলোকে স্থান দাও মন ও মননে। বন্ধুত্ব মেকি নয়! বন্ধুত্ব বেঁচে থাকুক সারাজীবন। পাশে থেকো বন্ধু সব সময়।

 
Electronic Paper