অনিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণে আসুক
সম্পাদকীয়
🕐 ৯:১৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
ভেজাল খাদ্যে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ মারা যায়। যে কারণে দেশে বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছুটছে সাধারণ মানুষ। একদিকে বেড়েছে চিকিৎসা ব্যয়, অন্যদিকে দূষণযুক্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রণের তেমন কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেই বললেই চলে। যদিও এ বিষয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, কিন্তু পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি বাজার নিয়ন্ত্রণের সংস্থাটির কার্যকারিতা সন্তোষজনক নয়।
শিল্পোৎপাদিত খাদ্যে অসম্পৃক্ত চর্বি বা ট্রান্স ফ্যাটের ফলে সৃষ্ট হৃদরোগের কারণে ফি বছর বিশ্বে সাড়ে ৫ লাখ মানুষ মারা যায়। এ ধরনের পরিস্থিতিকে মানব সৃষ্ট মহামারী হিসেবে ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে ভোক্তাদের সতর্ক করার সঙ্গে এ ধরনের পণ্য উৎপাদনকারী শিল্প কলকারখানার মালিকদের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
পাশাপাশি হৃদরোগে মৃত্যুঝুঁকি মোকাবেলায় ট্রান্স ফ্যাট জাতীয় খাদ্য ডালডা ও বনস্পতির উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহার জনস্বার্থে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘খাদ্যে ট্রান্স ফ্যাট, হৃদরোগ ঝুঁকি এবং করণীয় : ভোক্তা পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা
এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং প্রজ্ঞা-প্রগতির জন্য জ্ঞান যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, হৃদরোগে মৃত্যুর ঝুঁকি মোকাবেলায় ডালডা ও বনস্পতির উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। ডালডা ও বনস্পতির মতো আংশিক হাইড্রোজেনেডেট তেলে অতিমাত্রায় ট্রান্স ফ্যাট থাকায় এগুলো দিয়ে তৈরি খাদ্য মানুষের রক্তচাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি টাইপ-২ ডায়বেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। বাংলাদেশে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর ৩০ শতাংশই হৃদরোগের কারণে হচ্ছে।
এজন্য ট্রান্স ফ্যাট দায়ী। ট্রান্স ফ্যাটের ফলে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশে^ই অসংক্রামক রোগে মৃত্যুর হার বাড়ছে। পৃথিবীতে প্রতি বছর ১ কোটি ৭৯ লাখ মানুষ হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। যার মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ শিল্পোৎপাদিত ট্রান্স ফ্যাট গ্রহণের ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
যেসব খাদ্যপণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে, সেগুলো সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সজাগ রয়েছে বলে জানান দায়িত্বশীলরা। অনিরাপদ ও নিম্নমানের খাদ্যপণ্যের বিরুদ্ধে বিএসটিআইয়ের তদারকি জোরদার করারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেজাল ও অনিরাপদ খাদ্য প্রস্তুতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।