প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান পরিবেশ মন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৪:৩৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজে বের করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন। সরকার আইন করে ক্ষতিকর পলিথিনের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করেছে, এ আইন বাস্তবায়নে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল ক্যাম্পাসে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের নেচার কনজারভেশন ক্লাব ও পরিবেশ অধিদফতরের আয়োজনে ‘প্লাস্টিক বর্জ্য মুক্ত ভালবাসার ক্যাম্পাস ২০২০' শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, সার্বিক ক্ষতি থেকে বাঁচতে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জনের শপথ নিয়ে পরিবেশ দূষণ রোধে ভূমিকা রাখতে হবে সবাইকে।
পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ দূষণের অন্যতম নতুন উপাদান প্লাস্টিক। দ্রুত একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধের বিকল্প নেই। প্লাস্টিক ও পলিথিন বায়ু দূষণ, মাটি দূষণ, পানি দূষণসহ সার্বিক পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। প্লাস্টিক মানুষের শরীরে অনেক মরণ ব্যাধির পাশাপাশি ক্যান্সারের জন্য দায়ী। আসুন সকলে মিলে প্লাস্টিক, পলিথিনসহ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ বর্জন করার মাধ্যমে পরিবেশ দূষণমুক্ত বাসযোগ্য স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ি।
তিনি আরও বলেন, সভ্যতার অনুষঙ্গ হিসেবে এসেছে এই ক্ষতিকর প্লাস্টিক। ওয়ান টাইম কাপ-গ্লাস, চামচ, বোতলজাত পানি, খাবারের প্লাস্টিকের মোড়ক, স্ট্র, পলিথিন ব্যাগসহ যাবতীয় একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজে বের করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গবেষণা করতে হবে। তিনি এ সময় দূষণের কারণে সংকটাপন্ন ও বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের রক্ষায় করণীয় বিষয়েও গবেষণা করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো এবং এর পুনর্ব্যবহার ও রিসাইক্লিং বাড়ানোর মাধ্যমে প্লাস্টিক ব্যবহারের প্রক্রিয়াকে আর্থিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ভাবে উপযোগী করে তুলতে হবে।পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিক ও পলিথিন সরকারি ভাবে নিষিদ্ধকরণ এবং আইন প্রয়োগই যথেষ্ট নয়। ক্ষতিকর দিকটি অনুধাবন করে জনগণকেই এটি স্বতঃস্ফূর্তভাবে বর্জন করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, পরিবেশ দূষণ রোধে সরকারের আইন প্রয়োগ অব্যাহত রয়েছে। গত দুই বছরে পরিবেশ দূষণের দায়ে ১ হাজার ৬৯৫ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম গ্রহণ করে ২০ কোটি ২২ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে।
একই সময়ে পরিবেশগত বিভিন্ন অপরাধ, অবৈধ পলিথিন, ইটভাটাসহ পরিবেশ দূষকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা জরিমানা ছাড়াও ৪৬৫ টি অবৈধ ইটভাটা সম্পূর্ণ বা আংশিক ধ্বংস এবং ৩৮৭ মেট্রিক টন নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন, পলিথিন দানা ও কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে প্লাস্টিক মুক্ত ক্যাম্পাস রাখার জন্য শপথ গ্রহণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক হুমায়ুন রেজা খানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।