নারী-পুরুষে সমতা আসুক
সম্পাদকীয়
🕐 ৮:২২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২০
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সেই কবে বলে গেছেন- বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর। বাস্তবতা হচ্ছে, নারী-পুরুষে ব্যবধান এখনো ঘোচেনি। কবি সমতা দেখানোর চেষ্টা করলেও বাস্তবে তা পুরোমাত্রায় নেই। বিশ্বে পুরুষের তুলনায় গড়ে মাত্র তিন ভাগের এক ভাগ অধিকার ভোগ করে নারী। কর্মক্ষেত্র ও ব্যক্তি জীবনে নানাভাবে সুবিধাবঞ্চিত তারা।
আশার কথা হচ্ছে, বিশ্বের আটটি দেশে নারী ও পুরুষ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমানাধিকার ভোগ করছে। দেশগুলোতে আইনি বৈষম্যও নেই। বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, আইসল্যান্ড, লাটভিয়া, লুক্সেমবার্গ, সুইডেন ও কানাডা- এ আট দেশের নারী-পুরুষ কর্মক্ষেত্রে সমান সুবিধা পায়। চলাফেরা, মাতৃত্ব, সম্পত্তিসহ সব ক্ষেত্রে নারী পায় পূর্ণ স্বাধীনতা।
দেশগুলোর সব ধরনের কর্মক্ষেত্র নারীর জন্য নিরাপদ। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানির মতো ঘটনাও ঘটে না সেখানে। কর্মক্ষেত্রে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণ এ দেশগুলোর অর্থনীতির চাকা বদলে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এসব তথ্য জানানো হয়েছে। চলতি বছর যেসব দেশ অর্থনীতিতে নারী-পুরুষের সমানাধিকার নিশ্চিত করেছে তার একটি তালিকা সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’। তালিকা অনুযায়ী, লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করা শীর্ষ দেশ আইসল্যান্ড।
এরপরই আছে- নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নিকারাগুয়া, নিউজিল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, স্পেন, রুয়ান্ডা ও জার্মানির মতো দেশগুলো। অন্যদিকে পাকিস্তান, ইরাক ও ইয়েমেনে লিঙ্গবৈষম্য এখন পর্যন্ত অত্যন্ত বেশি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, সম্প্রতি কয়েকটি দেশ লিঙ্গবৈষম্য দূর করার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। গত তিন বছরে অন্তত ৪০ দেশে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে আইনি পরিবর্তন আনা হয়েছে। উত্তর আফ্রিকা ও মধ্যপ্রদেশের কয়েকটি দেশ কর্মক্ষেত্রে আইনি পরিবর্তন এনে নারী-পুরুষের বেতনসহ সব ক্ষেত্রে সমানাধিকার নিশ্চিত করেছে।
সম্প্রতি সৌদি আরব বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের কাজের সুযোগ দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। পরিবর্তনের তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে সৌদি আরব অন্যতম। সংশ্লিষ্টদের মতে, নারীর সমানাধিকার নিশ্চিত না হলে সমাজের আমূল পরিবর্তন আসবে না। টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রধান বিষয় হলো সমাজে লিঙ্গবৈষম্য বিলোপ।
আমরা মনে করি, বিদ্যমান সংকট থেকে মুক্তি পেতে নারীর অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে শক্তিশালী ভিতের ওপর দাঁড়ালে নারীর অপরাপর সমস্যাও সহজে দূরীভূত হবে। নারীর স্বনির্ভরতা মানে দেশেরই অগ্রগতি।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228