ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

আমের মুকুলে মনকাড়া ঘ্রাণ

জিয়াউর রহমান জিতু, মিরসরাই, চট্টগ্রাম
🕐 ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২০

আমের সোনালি হলুদ রঙের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসছে মনের আনন্দে। এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে মিরসরাই উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নে পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামে। এ দৃশ্য যে কাউকেই কাছে টানবে।

আম বাংলাদেশের প্রধান চাষযোগ্য অর্থকরী ফলগুলোর মধ্যে অন্যতম বলে বিবেচিত। পুষ্টিমান এবং স্বাদ-গন্ধে আম একটি অতুলনীয় ফল। উপজেলার অনেক স্থানে এবার আগাম আমের মুকুল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গাছে গাছে প্রচুর মুকুল এসেছে যা দেখে উচ্চফলনের আভাস মেলে।

সরজমিনে ঘুরে পূর্ব দুর্গাপুর গ্রামে দেখা যায় এ দৃশ্য। গ্রামের জমিউল হক ভিলার আঙিনায় দেখা যায় মুকুলে ছেয়ে যাওয়া আমগাছ। এছাড়াও মিরসরাইয়ের ওয়াহেদপুর, মিঠাছড়া, জোরারগঞ্জ, আবুতোরাব, মঘাদিয়া, সাহেরখালী, মায়ানী, করেরহাট, ইছাখালী, বড়দারোগারহাট এলাকার অনেক বাড়ির আঙিনায়, পুকুর ধারে আম গাছে মুকুল এসেছে।

উপজেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, এ সময়ে গাছের যথাযথ পরিচর্যা না করলে মুকুল ঝরে গিয়ে আমের ফলন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আম গাছে মুকুল আসার ১৫ দিন আগে পর্যাপ্ত সেচ দিতে হবে। টিএসপি ও এমপি সার দিতে হবে দুই-তিন বছর বয়সের গাছে ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম, চার-পাঁচ বছর বয়সের গাছে ৩০০ থেকে ৩৫০ গ্রাম, ছয়-সাত বছর বয়সের গাছে ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম, আট-নয় বছর বয়সের গাছে ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম এবং ১০ বছরের ঊর্ধ্বে ৮৫০ থেকে এক হাজার ২০০ গ্রাম প্রতি গাছে।

ফুল ফোটার সময় মেঘলা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকলে পুষ্পমঞ্জরিতে পাউডারি মিলিডিউ ও অ্যানত্রাকনোজ রোগের আক্রমণ হতে পারে। এতে গাছের পাতা, কচি ডগা, মুকুল ও কচি আমে কালো দাগ পড়ে। প্রাকৃতিক পরাগায়ণের জন্য আম বাগানে মৌমাছি পালন, বাগানের চারদিকে ফুলের গাছ রোপণ এবং বাগানে বিভিন্ন জাতের আম গাছ লাগানো প্রয়োজন। আম গাছে মুকুল আসার সময় হপার পোকা কচি অংশের রস চুষে খায়। ফলে মুকুল শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে ঝরে পড়ে।

এ ছাড়া রস চোষার সময় পোকা আঠালো পদার্থ নিঃসৃত করে। এতে ফুলে পরাগরেণু আটকে পরাগায়ণে বিঘ্ন ঘটে। যেমন-আমের মুকুল গুঁটি বাঁধার দুই সপ্তাহ পর ২০ পিপিএম মাত্রায় ২৪-ডি স্প্রে করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আমের গুঁটি মসুর দানার মতো বড় হলে ১০ লিটার পানিতে দুই থেকে তিন মিলিলিটার পানোফিক্স স্প্রে করলে ফল ঝরা বন্ধ হয়।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, আমের মুকুল আসার আগে গাছে পানি ছিটিয়ে পাতাগুলো ধুয়ে দিতে হয়। আমের মুকুল যখন গুঁটি দানার মতো হয় তখন ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হয়।

মিরসরাইয়ে গত বছর থেকে ৫ হেক্টর বেড়ে প্রায় সব মিলে ৮৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়। তবে উপজেলার ওয়াহেদপুর, দুর্গাপুর, করেরহাট, মুহুরী প্রজেক্ট ও পাহাড়ি এলাকায় আমের ফলন হয়। আমের ফলন বেশি বেশি পেতে হলে যথাযথ পরিচর্যা করতে হবে।

 
Electronic Paper