জয়ের লক্ষ্যে মরিয়া প্রচারণা
তোফাজ্জল হোসেন
🕐 ১০:৪৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২০
মরিয়া হয়ে প্রচারণায় ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থী তো বটেই, দম ফেলার সময় নেই কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও। যার যার অবস্থান থেকে নিজেকে সবাই যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ভোটারদের কাছে তুলে ধরছেন। প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট নিয়োগ, ভোটার লিস্ট সরবরাহের কাজও করছেন। সাধ্যমতো বিভিন্ন মহল্লার অলিগলিতে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করছেন তারা, পাশাপাশি প্রভাবশালী ভোটারদের কাছে গিয়ে একটু বেশি সময় দিচ্ছেন।
এবারের সিটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির পাশাপাশি বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বাম দল সিপিবি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ছাড়াও এনপিপি, পিডিপি, গণফ্রন্ট ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী রয়েছেন। দুই সিটিতে মোট নয়টি দলের ১৩ জন মেয়র প্রার্থী আছেন ভোটের মাঠে। মেয়র পদে এবার স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থী নেই। সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর সবমিলিয়ে ১ হাজার ৩০টি মনোনয়নপত্র জমা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটিতে দুজন হেভিওয়েট প্রার্থী এবারের নির্বাচনে লড়াই জমিয়েছেন। তারা হলেন, আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম ও বিএনপির তাবিথ আউয়াল। নির্বাচনী ময়দানে আছেন সিপিবির আহম্মেদ সাজেদুল হক রুবেল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ ফজলে বারী মাসউদ, এনপিপির আনিসুর রহমান দেওয়ান ও পিডিপির শাহীন খান। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটির দুজন প্রভাবশালী মেয়রপ্রার্থী হচ্ছেন, আওয়ামী লীগের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও বিএনপির প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।
তাদের পাশাপাশি আছেন জাতীয় পার্টির হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আবদুর রহমান, এনপিপির বাহারানে সুলতান বাহার, গণফ্রন্টের আব্দুস সামাদ সুজন ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের আকতার উজ্জামান ওরফে আয়াতুল্লাহ আকতার। ঢাকা দক্ষিণে মেয়র পদে ৭ জন লড়াই করছেন। সাধারণ কাউন্সিলর ৪৬০ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আছেন ১০২ জন প্রার্থী। ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভোটযুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আর সাধারণ কাউন্সিলর ৩৭৪ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে আছেন ৮৯ জন প্রার্থী।
মিরপুর টোলারবাগ এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক মতিয়ার রহমান দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, ভোটের যুদ্ধে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির মীরেরবাগ এলাকার বাসিন্দা ফারুক আলম মনে করেন মানুষ এবার ভোট নিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করছে, সবদিক বিবেচনা করেই তারা ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটির সিদ্ধেশ্বরীর বাসিন্দা মকসুদার রহমান দৈনিক খোলা কাগজকে বলেন, এবার হয়তো কিছুটা ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে। আমি নিজের ভোট নিজে দেওয়ার চেষ্টা করব।
ভোটাররা যে যার ভাবনা ভাবছেন। প্রার্থীরা এরই মধ্যে আছেন মাঠে। ভোটারদের সঙ্গে কথা বলছেন, নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তারা হাঁটছেন মাইলের পর মাইল, হাসিমুখে ভোটারদের সঙ্গে ছবিও তুলছেন তারা। কোনো কিছুতেই ক্লান্তি নেই। ঢাকা সিটিতে আগে নির্বাচন করেছেন উত্তরে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, তিনি মেয়র নির্বাচিতও হয়েছেন। তবে এবার প্রকৃত অর্থেই একটা চ্যালেঞ্জিং নির্বাচনের মুখোমুখি তিনি। তাই প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাচ্ছেন তিনি।
উত্তরে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালও আগে মেয়র নির্বাচন করেছেন।
এবারের নির্বাচনকে একটু আলাদাভাবে দেখছেন তিনিও। দক্ষিণে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার তাপস ধানমণ্ডি থেকে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তা ছিল সংসদ নির্বাচন। মেয়র পদে এই প্রথম তিনি নির্বাচনী ময়দানে। এই সিটিতে বিএনপির প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন ভোটের মাঠে এই প্রথম। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে নিজের এলাকায় প্রতিদিনই প্রচারণা চালাচ্ছেন ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন।
প্রার্থীরা বিভিন্ন সময় বলেছেন, এবারের নির্বাচনে উৎসবটা একটু বেশি, প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস পেয়েছেন তারাও। তাই সব প্রার্থীরই চোখ ভোটারদের দিকে। তারা চান ভোটাররাই তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করুন।