ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ই-পাসপোর্টের জন্য তিনদিনে আবেদন ২ হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৬:৩১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২০

ই-পাসপোর্ট উদ্বোধনের তিন দিনের মধ্যেই অনলাইনে আবেদন করেছেন দুই হাজার মানুষ। বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীদের পর্যায়ক্রমে ১২-১৫ দিন পর বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেয়ার পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়া হচ্ছে।

২২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট উদ্বোধনের পরের তিন দিন অর্থাৎ ২৩, ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি এই দুই হাজার আবেদন জমা পড়ে।

অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ই-পাসপোর্টে মোট ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে যেগুলো সংগ্রহ করা এমআরপি থেকেও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যাচাই করে দেখা গেছে ই-পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহে ১৫ মিনিট করে সময় লাগবে। সেই হিসাবে কার্যঘণ্টা ও বুথ অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ নির্ধারণ করছে ই-পাসপোর্টের অনলাইন সফটওয়্যার।

একজন আবেদনকারী আবেদনের ১২-১৫ দিন পর অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাচ্ছেন। বায়োমেট্রিক দেয়ার পর থেকে তার আবেদনের নির্ধারিত (৩ দিন, ৭ দিন, ২১ দিন) দিনক্ষণ গণনা শুরু হবে বলে জানিয়েছে অধিদফতর। অর্থাৎ এই প্রক্রিয়ায় সাধারণ ই-পাসপোর্ট আবেদনকারী নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১২-১৫ দিন বিলম্বে পাসপোর্ট পাবেন।

বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, বর্তমানে আবেদনের সম্পূর্ণ পদ্ধতি অনলাইনে। দ্বিতীয় ধাপের জন্য আবেদনকারীকে অধিদফতরে আসতে হবে। অনেকেই এই বিষয়টি না জেনে এবং অনলাইনে আবেদন না করে অধিদফতরে এসে ই-পাসপোর্টের জন্য ছোটাছুটি করছেন। ই-পাসপোর্টের বুথগুলোতে লাইন নেই বলে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তবে আমরা অনেকের কাছেই আমাদের মেসেজ স্পষ্টভাবে পৌঁছে দিতে পেরেছি। ইতোমধ্যে তিন দিনে অনলাইনে দুই হাজার ই-পাসপোর্টের আবেদন পাওয়া গেছে।

এর আগে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি বাংলাদেশে ই-পাসপোর্টের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এই পাসপোর্ট গ্রহণ করেন। পরদিন ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা শহরের বাসিন্দারা ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারছেন। রাজধানীর আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, সচিবালয় ও ক্যান্টনমেন্টে তাদের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে।

অত্যাধুনিক এই ই-পাসপোর্টে একটি এমবেডেড ইলেকট্রনিক মাইক্রোপ্রসেসর (মোবাইলের মেমোরি কার্ডের মতো) চিপ থাকবে। এই মাইক্রোপ্রসেসর চিপে পাসপোর্টধারীর বায়োগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক (ছবি, আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ) তথ্যসহ মোট ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা ফিচার থাকবে। পৃথিবীর ১১৯টি দেশের নাগরিকরা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করেন।

ই-পাসপোর্টের বই দেখতে অনেকটা চলমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) মতোই হবে। তবে এমআরপির প্রথম দুই পাতায় পাসপোর্টধারীর তথ্য থাকলেও ই-পাসপোর্টের দ্বিতীয় পাতাটি থাকবে একটি পলিমারের তৈরি কার্ডের মতো (ডেবিট/ক্রেডিট/এটিএম কার্ড সদৃশ)। কার্ডে পাসপোর্ট বাহকের নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখসহ বিভিন্ন মৌলিক তথ্য থাকবে। এছাড়াও সেই কার্ডের ভেতর একটি মাইক্রো চিপ থাকবে, যেখানে পাসপোর্ট বাহকের সব গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল তথ্য ও ডাটাবেজ সংরক্ষিত (কিন্তু অদৃশ্যমান) থাকবে। ডাটাবেজে থাকবে পাসপোর্টধারীর তিন ধরনের ছবি, ১০ আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ।

৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি তিন হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি সাত হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি পাঁচ হাজার টাকা, জরুরি ফি সাত হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি নয় হাজার টাকা। এছাড়া ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য সাধারণ ফি পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, জরুরি ফি সাত হাজার ৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০ হাজার ৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি সাত হাজার টাকা, জরুরি ফি নয় হাজার টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২ হাজার টাকা।

নতুন পাসপোর্টের ক্ষেত্রে অতীব জরুরিতে তিন দিনে, জরুরিতে সাত দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট আবেদনের ক্ষেত্রে ২১ দিনে পাসপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে পুরোনো অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার ক্ষেত্রে অতীব জরুরি পাসপোর্ট দুই দিনে, জরুরি পাসপোর্ট তিন দিনে ও সাধারণ পাসপোর্ট সাত দিনের মধ্যে দেয়া হবে।

ই-পাসপোর্ট করতে যা লাগবে-
ই-পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে আবেদনের পর অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা জন্মনিবন্ধন সনদের (বিআরসি) ফটোকপি নিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি মূলকপিও অধিদফতরের কর্মকর্তাদের দেখাতে হবে।

এছাড়াও অপ্রাপ্তবয়স্ক (১৮ বছরের কম) আবেদনকারী, যার জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, তার পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে।

এমআরপিকে ই-পাসপোর্টে রূপান্তরের ক্ষেত্রে সর্বশেষ পাসপোর্টের ফটোকপিও জমা দিতে হবে।

 
Electronic Paper