নিজগৃহে পরবাসী জামালরা
ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৫, ২০২০
অনেকদিন ধরেই শিরোপা উৎসব করতে পারছে না বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। দেশের ফুটবলে খরার মধ্যে কালেভদ্রে এক পশলা বৃষ্টি দেখা দিলেও সেটা দীর্ঘায়িত হচ্ছে না কোনোভাবেই। বরং একটা পর একটা ব্যর্থ অভিযান ক্রমেই হতাশায় ডুবিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে। এই যেমন ঘরের মাঠে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্ট নিয়েও দলের হতাশার শেষ নেই।
ছয় দলের টুর্নামেন্টের তিনটিকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে আফ্রিকা অঞ্চল থেকে। গ্রুপপর্বে তিনটি দলই একই গ্রুপে ছিল। ফিলিস্তিন ও শ্রীলঙ্কা ছিল বাংলাদেশের গ্রুপে। প্রথম দলটা গত আসরের চ্যাম্পিয়ন। উদ্বোধনী ম্যাচে এই দলটার কাছে হেরেই অভিযান শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে উতরে গেছেন জামালরা। এক ম্যাচ জিতেই উঠেছেন সেমিফাইনালে।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আরো বড় হতাশা। আফ্রিকার দল বুরুন্ডির সামনে দাঁড়াতেই পারেননি জামালরা। পরশু ঘরের মাঠে হেরেছেন ৩-০ গোলে। বাংলাদেশের হারটা গ্যালারিতে বসে দেখেছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা গোলরক্ষক জুলিও সিজার। বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নের অংশ হিসেবে সিজারকে পাঠানো হয়েছিল ফিফার তরফ থেকে। কিন্তু বাহ্যিকভাবে এসবকিছু অনুপ্রেরণা হলেও মাঠের খেলায় লাল-সবুজদের পারফরম্যান্স যাচ্ছে তা।
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমনের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ এখন দর্শক। এ যেন নিজগৃহে পরবাসী। আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলবে বুরুন্ডি ও ফিলিস্তিন। যদিও এই ম্যাচটা খেলার স্বপ্ন ছিল জামালদের। আশা পূরণ হয়নি সেমিফাইনালে হেরে যাওয়ায়। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মোহাম্মদ ইব্রাহিম, মাহবুবুর রহমান সুফিল, সাদউদ্দিন নষ্ট করেছেন একাধিক সুযোগ। ক্রসবারও গোলবঞ্চিত করেছে। সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যাওয়ার পর বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে আক্ষেপ জানালেন নষ্ট হওয়া সুযোগগুলো নিয়ে।
ম্যাচে একাধিক সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। ২২ মিনিটে সময় ক্ষেপণ করে সুযোগ হারান সুফিল। ৪৮ মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে গোলরক্ষককে একা পেয়েও তার গায়ে মারেন সাদউদ্দিন। ৬১ মিনিটে জামালের ক্রসে সুফিলের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট। এরপর কর্নারে রিয়াদুল হাসান রাফির হেড পোস্টে লেগে ফিরে।
বাকিটা সময়ও গোল অধরা ছিল বাংলাদেশের। ৬৭ মিনিটে সাদউদ্দিনের হেড অল্পের জন্য ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। এরপর জামালের ফ্রি-কিক, বদলি রাকিব হোসেনের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ দিকে সাদউদ্দিনের হেড ক্রসবারে লেগে ফিরে। নষ্ট হওয়া সুযোগগুলো ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে বলে জানান ডে, ‘আগের দুটি ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও আমাদের বল পজিশন ভালো ছিল। কিন্তু তিনটি গোল খাওয়া হতাশার। বুরুন্ডির সঙ্গে আমাদের পার্থক্য একটাই-ওরা সুযোগ পেয়েছে এবং কাজে লাগিয়েছে। আমরা হয়তো ওদের চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারিনি কিন্তু সমান সমান করেছি কিন্তু গোল করতে পারিনি।’
যার জোড়া গোলে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ সেই মতিন মিয়া ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি বুরুন্ডি ম্যাচে। তবে তার অনুপস্থিতি দলে কোনো প্রভাব ফেলেনি বলে দাবি করলেন জেমি, ‘মতিন মিয়ার চোটে খেলায় কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে সে যেহেতু শ্রীলঙ্কা ম্যাচে দুটি গোল করেছিল, এ ম্যাচে থাকলে অন্যরকম কিছু হতে পারত। তবে প্রথমার্ধে আমরা ভালো খেলেছি- শেষ দিকের ওই দুই মিনিট ছাড়া।’