ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

হার দিয়ে সিরিজ শুরু টাইগারদের

স্পোর্টস ডেস্ক
🕐 ৭:১৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৪, ২০২০

ব্যাটসম্যানরাই ম্যাচটা বলতে গেলে শেষ করে দিয়েছেন। দারুণ শুরুর পরও ১৪১ রানেই আটকে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। তারপরও বোলাররা লড়াই করেছেন সাধ্যমতো। দলকে জেতানোর চেষ্টা করেছেন। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। লাহোরে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ৫ উইকেট আর ৩ বল হাতে রেখে হারিয়েছে পাকিস্তান।

ম্যাচ শেষে আক্ষেপ হয়ে রইলো ১০-১৫ রান। আর কিছু রান বোর্ডে তুলতে পারলে হয়তো ফলটা অন্যরকম হতে পারতো। বোলাররা যেভাবে চেষ্টা করেছেন, তাতে আফসোস তো হচ্ছেই টাইগার ক্রিকেট ভক্তদের!

পাকিস্তানের এই ম্যাচটা বের করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। শেষ দুই ওভারে দরকার ছিল ৯ রান। ইমাদ ওয়াসিমকে (৪ বলে ৬) বোল্ড করে ম্যাচটা জমিয়ে তুলেছিলেন আল আমিন। ওই ওভারে দারুণ বোলিং করে মাত্র ৪ রান খরচ করেন এই পেসার।

ফলে শেষ ওভারে পাকিস্তানের দরকার পড়ে ৫ রান। সৌম্য সরকারের করা ওই ওভারের প্রথম বলটা লং অনে ঠেলে দিয়েই ২ রান নিয়ে নেন মালিক। পরের বলে সিঙ্গেল। তৃতীয় বলটা তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান (৫), কিন্তু ডিপ মিডউইকেটে সহজ ক্যাচ ফেলে দেন মোহাম্মদ মিঠুন। ম্যাচশেষে এমন অনেক ভুলই বড় হয়ে দাঁড়ালো। আফসোস বাড়ালো বাংলাদেশের।

পাকিস্তানি ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা দেন শফিউল ইসলাম। ইনিংসের দ্বিতীয় বলে দারুণ এক ডেলিভারিতে তিনি পরাস্ত করেন বাবর আজমকে। উইকেটের পেছনে শূন্য রানেই ক্যাচ হন পাকিস্তানি অধিনায়ক।

দ্বিতীয় উইকেটে ৩৫ রানের জুটিতে সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠেন মোহাম্মদ হাফিজ আর আহসান আলি। পঞ্চম ওভারে এই জুটিটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। তার কাটারে বিভ্রান্ত হয়ে শর্ট এক্সট্রা কভারে সহজ ক্যাচ তুলে দেন ১৬ বলে ১৭ রানে থাকা হাফিজ।

৩৫ রানে ২ উইকেট হারায় পাকিস্তান। সেখান থেকে তৃতীয় উইকেটে ৪০ বলে ৪৬ রানের জুটি শোয়েব মালিক আর আহসানের। ১২তম ওভারে আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে তুলে মারতে গিয়ে আউট হন আহসান, ৩২ বলে করেন ৩৬ রান।

কিন্তু অভিজ্ঞ মালিক দেখেশুনে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। চতুর্থ উইকেটে ইফতিখার আহমেদকে নিয়ে গড়েন ৩৬ রানের জুটি। পাকিস্তান তখন সহজ জয়ের পথে, ২১ বলে দরকার ২৫ রান।

এমন সময়ে আহসানের (১৩ বলে ১৬) উইকেটটি তুলে নেন শফিউল। কভার ড্রাইভ করতে গিয়ে এই ব্যাটসম্যান ইনসাইডেজ হন উইকেটের পেছনে। তবে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে তবেই থেমেছেন মালিক। ৪৫ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

বাংলাদেশের পক্ষে বল হাতে সবচেয়ে সফল শফিউল ইসলাম। ৪ ওভারে ২৭ রানে ২টি উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। আল আমিনও দারুণ বল করেছেন, ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে পেয়েছেন ১টি উইকেট।

এর আগে পাকিস্তানি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৫ উইকেটে ১৪১ রানেই থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। অথচ ১১ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে বিনা উইকেটেই ওঠেছিল ৭১ রান।

টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বেশ সাবধানী শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল আর নাইম শেখ। পাওয়ার প্লে'র প্রথম ৬ ওভারে ছয়ের নিচে রানরেটে তারা তুলেন মোটে ৩৫ রান।

তামিম-নাইমের এই জুটিকে বিপদে ফেলতে পারছিলেন না পাকিস্তানি বোলাররা। দেখেশুনে খেলে ১০ ওভারে তারা জমা করেন ৬২ রান। তবে সমস্যা একটাই, ঠিক টি-টোয়েন্টির গতিতে রান উঠছিল না।

সেই চাপ থেকেই বোধ হয় ১১তম ওভারের শেষ বলে ডিপ স্কয়ারে ঠেলেই দ্রুত দুই রান নিতে গিয়েছিলেন তামিম। রওফের থ্রোয়ে স্ট্রাইকিং এন্ডে ফেরার আগেই রানআউট হন এই ওপেনার, ৩৪ বলে ৪ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় করেন ৩৯ রান।

এরপর ২১ বলে ২৭ রানের ছোট এক জুটি নাইম-লিটনের। শাদাব খানের করা ১৫তম ওভারে এই দুই ব্যাটসম্যানকেই হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। ওভারের তৃতীয় বলে ডাবল নিতে গিয়ে তামিমের মতই রানআউটে কাটা পড়েন লিটন দাস।

লং অফে শাদাব নিজেই দৌড়ে গিয়ে বল ধরেন, সরাসরি থ্রোতে সাজঘরে ফেরান ১৩ বলে ১২ রান করা লিটনকে। পরের বলে সেট ব্যাটসম্যান নাইমকেও লংঅনে ক্যাচ বানান এই লেগস্পিনার। ৪১ বলে ৩ চার আর ২ ছক্কায় নাইম তখন ৪৩ রানে।

তারপরও হাতে ৭ উইকেট ছিল। বড় পুঁজি গড়ার সুযোগ ছিল টাইগারদের। কিন্তু পাকিস্তানি বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পরের ব্যাটসম্যানরা সেভাবে হাত খুলে খেলতে পারেননি। ১৮তম ওভারে হারিস রউফ বোল্ড করেন আফিফ হোসেনকে (১০ বলে ৯)। পরের ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড সৌম্য সরকারও (৫ বলে ৭)।

১৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১০০ রান পূরণ করা বাংলাদেশ শেষ ৫ ওভারে তুলতে পেরেছে মাত্র ৪১ রান। মাহমুদউল্লাহ ১৪ বলে ১৯ আর মোহাম্মদ মিঠুন ৩ বলে ৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

পাকিস্তানের পক্ষে একটি করে উইকেট নিয়েছেন শাহীন আফ্রিদি, শাদাব খান আর হারিস রউফ।

 
Electronic Paper