গুরুত্বপূর্ণ সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা
সুধীর বরণ মাঝি
🕐 ৩:৩৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
উদ্দীপকটি পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
আসমা নেপোলিয়ান বোনাপার্টের আত্মজীবনী পড়ছিল। নেপোলিয়ান তার সময়ে আরবের একটি দেশ জয় করেছিলেন। দেশটি পিরামিডের দেশ নামে পরিচিত। সে সময় ওই দেশ থেকে ‘রসেটা স্টোন’ নামে একটি পাথর আবিষ্কৃত হয়। পাথরটিতে গ্রিক এবং হায়ারোগ্লিফিক ভাষায় লেখা ছিল।
ক) হরপ্পা নগরী আবিষ্কৃত হয় কত সালে?
খ) রোমান সম্রাটরা ধর্ম প্রচার বন্ধ করে দেন কেন?
গ) উদ্দীপকে নেপোলিয়ানের জয় করা দেশটির সঙ্গে যে বিশ্বসভ্যতা জড়িত, তার ব্যাখ্যা করো।
ঘ) ‘হায়ারোগ্লিফিক’ ওই সভ্যতার অন্যতম প্রধান নিদর্শন-বিশ্লেষণ করো।
উত্তর : ক) হরপ্পা নগরী ১৯২২-২৩ সালে আবিষ্কৃত হয়।
খ) রোমানদের পরকালের প্রতি বিশ্বাস ছিল না। অগাস্টাস সিজারের সময় থেকে ঈশ্বর হিসেবে রোমানরা সম্রাটকে পূজা করত। এ সময়ে খ্রিস্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিস্টের জন্ম হলে, রোমান ধর্মের পাশাপাশি খ্রিস্ট ধর্মও বিস্তার লাভ করতে থাকে। অনেক রোমান খ্রিস্ট ধর্ম গ্রহণ করে। এতে সম্রাট ক্ষুব্ধ হন, কারণ খ্রিস্ট ধর্মের অনুশাসন মানতে গেলে সম্রাটকে আর ঈশ্বরের মতো পূজা করা যায় না। ফলে রোমান সম্রাটরা ধর্ম প্রচার বন্ধ করে দেন।
গ) উদ্দীপকে নেপোলিয়নের জয় করা দেশটির সঙ্গে মিসরীয় সভ্যতা জড়িত। আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর-পূর্ব অংশে বর্তমান যে দেশটির নাম ইজিপ্ট, সেই দেশেরই প্রাচীন নাম মিসর। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে মিসরে প্রথম সাম্রাজ্যের উদ্ভব ঘটে।
তিনটি মহাদেশ দ্বারা ঘিরে থাকা মিসরের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশটি এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপ মহাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত ভূ-মধ্যসাগরের উপকূলে অবস্থিত। মিসরীয়রা ফারাওদের মৃতদেহকে সংরক্ষণের জন্য পিরামিড তৈরি করেছিল। এ জন্য মিসরকে পিরামিডের দেশ বলা হয়। সভ্যতায় মিসরীয়দের অবদানের মধ্যে হায়ারোগ্লিফিক বা পবিত্র অক্ষর অন্যতম। এখানে উল্লেখ্য যে ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ান বোনাপার্টের মিসর জয়ের সময় একটি পাথর আবিষ্কৃত হয়, যা রসেটা স্টোন নামে পরিচিত। যাতে গ্রিক এবং হায়ারোগ্লিফিক ভাষায় অনেক লেখা ছিল, যা থেকে প্রাচীন মিসরের অনেক তথ্য জানা যায়। তাই পরিশেষে বলা যায়, উদ্দীপকে নেপোলিয়নের জয় করা দেশটির সঙ্গে বিশ্বসভ্যতার প্রাচীনতম মিসরীয় সভ্যতা জড়িয়ে আছে।
ঘ) হায়ারোগ্লিফিক ওই সভ্যতা অর্থাৎ মিসরীয় সভ্যতার অন্যতম প্রধান নির্দশন।
মিসরীয় সভ্যতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল লিপি বা অক্ষর আবিষ্কার। নগরসভ্যতা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে মিসরীয় লিখন পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে। পাঁচ হাজার বছর আগে তারা সর্বপ্রথম ২৪টি ব্যঞ্জনবর্ণের বর্ণমালা আবিষ্কার করে। প্রথম দিকে ছবি এঁকে তারা মনের ভাব প্রকাশ করত। এ লিখন পদ্ধতির নাম ছিল চিত্রলিপি। এ চিত্রলিপিকে বলা হয় হায়ারোগ্লিফিক বা পবিত্র অক্ষর। মিসরীয়রা নাল খাগড়াজাতীয় গাছের খণ্ড থেকে তারা কাগজ বানাতে শেখে। সেই কাগজের ওপর তারা লিখত। গ্রিকরা এ কাগজের নাম দেয় ‘প্যাপিরাস’। যে শব্দ থেকে ইংরেজিতে পেপার শব্দের উৎপত্তি। এখানে উল্লেখ, নেপোলিয়ান বোনাপার্টের মিসর জয়ের সময় একটি পাথর আবিষ্কৃত হয়, যা রসেটো স্টোন নামে পরিচিত। যাতে গ্রিক এবং ‘হায়ারোগ্লিফিক’ ভাষায় অনেক লেখা ছিল, যা থেকে প্রাচীন মিসরের অনেক তথ্য জানা যায়।
পরিশেষে বলা যায়, মিসরীয় সভ্যতার অন্য সব নিদর্শনের মধ্যে হায়ারোগ্লিফিক অন্যতম। যা মিসরীয় সভ্যতাকে আজও অবিস্মরণীয় করে রেখেছে।
সুধীর বরণ মাঝি
সিনিয়র শিক্ষক, হাইমচর সরকারি মহাবিদ্যালয়, চাঁদপুর।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228