এক বছরে ভর্তুকি ১৫ কোটি বকেয়া টাকা চায় টিসিবি
জাফর আহমদ
🕐 ১০:১৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২০
ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশ (টিসিবি) বেশি দামে পণ্য কিনে কম দামে বিক্রি করে। বাড়তি টাকা ভর্র্তুকি হিসাবে সরকার দিয়ে থাকে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কম দামে নিত্যপণ্য বিক্রি করে টিসিবি ১৪ কোটি ৭৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা ঘাটতি দেয়। এ টাকা সরকারের কাছে চেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এ ব্যাপারে চিঠি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে চারটি নিত্যপণ্য খোলা বাজারে বিক্রি করে টিসিবি। এ সব পণ্যের মধ্যে রয়েছে, ছোলা, খেজুর, মশুরের ডাল, চিনি ও ভোজ্যতেল (সোয়াবিন)। ছোলাতে ভর্তুকি দেওয়া হয় ৫ কোটি ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। খেজুরে ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা। চিনিতে দিতে হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। ভোজ্যতেলে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। আর ব্যাংকের সুদ ভর্তুকি দিতে হয়েছে ৩ কোটি ২ লাখ ৯৬ হাজার। যথাসময়ে টাকা ব্যাংকের টাকা দিতে না পারায় সুদের পরিমাণ আরও বেড়েছে।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১ হাজার ৯৫৫ মেট্রিক টন ছোলা বিক্রি করা হয়। এ ছোলার ক্রয়মূল্য, সরকারের কাছে প্রাপ্ত ছোলার মূল্য ও ডিলারদের পরিচালন ব্যয় ধরে ক্রয়মূল্য ছিল ১৪ কোটি ৯০ হাজার ২০২ টাকা। এ ছোলার ক্রয়মূল্য ছিল ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯২ হাজার ৮৩৫ টাকা। ছোলা বিক্রিতে ভর্তুকি দিতে হয়েছে ৫ কোটি ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার ৩৬৭ টাকা ঘাটতি লাগে। এ অর্থবছরে আগের ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকারের বরাদ্দ ছোলাও বিক্রি করা হয় বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০০ টন খেজুর বিক্রি করে টিসিবি। আনুষঙ্গিক খরচসহ খেজুরের ক্রয়মূল্য ছিল ১ কোটি ২১ লাখ ২৬ হাজার ৭৪৭ টাকা। এ বছর বিক্রির চেয়ে কম দামে খেজুর বিক্রি করার কারণে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয় ১৬ লাখ ৫০ হাজার ৩৫২ টাকা।
এ বছরে টিসিবি চিনি বিক্রি করে মাত্র ১ হাজার ৫৫৯ টাকা। আনুষঙ্গিক খরচসহ চিনির মোট ক্রয়মূল্য ছিল ৯ কোটি ৮১ লাখ ৩০ হাজার ৩০৭ টাকা। বিক্রয় মূল্য ছিল ৭ কোটি ৩১ লাখ ২৩ হাজার ৪৮৭। এ বছর চিনি বিক্রয়ে ভর্তুকি দিতে হয় ২ কোটি ৪৯ লাখ ৬ হাজার ৮২০ টাকা। এ বছর টিসিবি সয়াবিন তেলে ভর্তুকি দেয় ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৬ কোটি টাকা। টিসিবি এ বছরে মোট ১১ লাখ ৮৮ হাজার ১৯০ লিটার সয়াবিন সংগ্রহ করে। এ তেল স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা হয়। ১১ লাখ ৮৮ হাজার ১৯০ লিটার সয়াবিন সংগ্রহ মূল্য ও অন্যান্য খরচ মিলে মোট ক্রয় দাম ছিল ১২ কোটি ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৭ টাকা। কিন্তু বিক্রয় করে ৯ কোটি ৫৫ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪১ টাকায়।
সূত্রগুলো জানায়, সরকারের গ্যারান্টির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে টিসিবি ঋণ সংগ্রহ করে থাকে। এ ঋণের ৯ থেকে ১২ শতাংশ হারে সুদ দেয় টিসিবি। সময় মতো টাকা দিতে না পারায় ব্যাংক ঋণের সুদের টাকারও বিপুল পরিমাণ সুদ দিতে হয়। ফলে পণ্য বিক্রি করে সরকার টিসিবিকে যে পরিমাণ ভর্তুকি দেয় তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশের সমান টাকা দেয় ব্যাংক ঋণ। টিসিবির নিরীক্ষিত হিসাবে বিষয়টি উঠে এসেছে।