করোনা ভাইরাস : সতর্কতা জরুরি
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:১১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২২, ২০২০
করোনা ভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এ ভাইরাসে শ্বাসতন্ত্রে রোগ হয়। এই রোগের প্রধান লক্ষণ জ্বর। এর সঙ্গে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিয়ে থাকে। এই ভাইরাসজনিত রোগের সঙ্গে প্রাণঘাতী রোগ সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোমের (সার্স) মিল রয়েছে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। তবে এই ভাইরাস মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) কর্মকর্তারা বলেছেন, এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ৩২ জনের শ্বাসনালি থেকে লালার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু কারও নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়নি। এই রোগটি নির্ণয় ও এর চিকিৎসার জন্য সরকার প্রস্তুত আছে। এ পর্যন্ত ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, জর্ডান, কাতার, সৌদি আরব, তিউনিসিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে এই রোগ শনাক্ত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে এ পর্যন্ত ১৪১ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫৭ জন মারা গেছে। গত সপ্তাহে রিয়াদের প্রিন্স সালমান হাসপাতালে একজন প্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়। সরকারি সূত্র জানায়, সৌদি এয়ারলাইন্স ও বাংলাদেশ বিমানে ফেরা হজযাত্রীদের কাছ থেকে একটি হলুদ রঙের ফরম পূরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ফরমে এমন কিছু প্রশ্ন আছে, যার উত্তর পেলে সন্দেহভাজন ব্যক্তি শনাক্ত করা সম্ভব। কিন্তু সেই ফরমটি পূরণ করিয়ে নেওয়ার কাজটি যথাযথভাবে হয়নি। কর্মকর্তারা বলছেন, সৌদি আরব বা মধ্যপ্রাচ্যের যে কোনো দেশ থেকে আসা যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা দরকার।
স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআর বলেছে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে জ্বর ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি এবং কাশি ও মারাত্মক শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দেহে মার্স-করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে বলে ধরা যায়। এ ক্ষেত্রে অতিসত্বর নিকটস্থ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করতে হবে। এই ভাইরাসে শ্বাসকষ্ট খুব বেশি হয়। সন্দেহ হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, করোনা ভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায় তা এখনো অজানা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এ বিষয়ে যে গুটিকয়েক দেশে রোগ নির্ণয় করার পরীক্ষাগার আছে, বাংলাদেশ তার একটি। স্বাস্থ্য অধিদফতর এ ব্যাপারে সতর্ক আছে। আইইডিসিআর সূত্র বলছে, মার্স ভাইরাস বিষয়ে রাজধানী ঢাকার প্রধান হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকরাও এই রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দেওয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। রোগের প্রকোপ দেখার জন্য ২৩টি হাসপাতালে সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। রোগগ্রস্ত হওয়ার চেয়ে প্রতিরোধ উত্তম। দেশবাসী করোনা ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক হবেন- এটাই প্রত্যাশা।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228