ইতিহাস ঐতিহ্যের সাক্ষী
নাটোর প্রতিনিধি
🕐 ১১:০৯ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২১, ২০২০
ইতিহাস আর ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে নাটোরের উত্তরা গণভবন বা দিঘাপতিয়া রাজবাড়ি। নাটোরের মাদ্রাসা মোড় থেকে তিন কিলোমিটার উত্তরে দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির অবস্থান। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিঘাপতিয়া রাজবাড়িকে ‘উত্তরা গণভবন’ হিসেবে ঘোষণা করেন।
ইাতহাস থেকে জানা যায়, দিঘাপতিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা দয়ারাম রায়। দয়ারাম ছিলেন নাটোরের রানী ভবানীর অধীনস্থ নায়েব। রানীভবানী দয়ারামকে এতো বিশ্বাস করতেন যে রানীর পক্ষে দয়ারাম গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধান্ত গ্রহণ ও স্বাক্ষর করতেন। রানী দয়ারামের বিচক্ষণতায় মুগ্ধ হয়ে তাকে দিঘাপতিয়া পরগনার জমিদারি উপহার দেন।
১৭৩৪ সালে প্রায় ৪২ একর জমির ওপর দয়ারাম রায় স্থাপত্যকলার অন্যতম নিদর্শন এই দিঘাপতিয়া রাজপ্রসাদটি নির্মাণ করেন। ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে প্রাসাদটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেলে রাজবাড়িটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। দিঘাপতিয়া রাজবংশের রাজাগণ ১৭১০ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত রাজ্য শাসন করেন। স্বাধীনতার পর বেশ কয়েকবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এখানে।
দিঘাপতিয়া রাজবাড়ির সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয় সব বয়সী মানুষ। এর দৃষ্টিনন্দন মূল ফটকের ওপরে রয়েছে ইটালির ফোরেন্স থেকে আনা বিশাল ঘড়ি, যা এখনও সঠিক সময় দিচ্ছে এবং এর ঘন্টাধ্বনি বহুদূর থেকে শোনা যায়।
এমনিভাবেই চলছে বছরের পর বছর। চারিদিকে সুউচ্চ প্রাচীর ও সুগভীর পরিখা পরিবেষ্টিত রাজবাড়ির ভবনগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রধান প্রাসাদ ভবন, কুমার প্যালেস, কাচারি ভবন, তিনটি কর্তারানী বাড়ি, রান্নাঘর, মোটর গ্যারেজসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
প্যালেসের দক্ষিণে রয়েছে ইতালিয়ান গার্ডেন যাতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন মূল্যবান মার্বেল পাথরে কারুকাজ করা ভাস্কর্য। দেশি-বিদেশি নানা জাতের শোভা বর্ধনকারী গাছ। ভাস্কর্যগুলো একটা পাথরখ- কেটে তৈরি। অত্যন্ত নিপুণ হাতের কারুকাজ। প্রধান ভবনের সামনে ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশদের নির্মিত দুটি কামানসহ রাজবাড়িতে মোট ছয়টি কামান রয়েছে।