ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শীতগুচ্ছ

আশিক মাহমুদ রিয়াদ
🕐 ৯:০৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৩, ২০২০

শীতপাটকেল
এলাকার পিন্টুর শীত নিয়ে যত ভয়। সে তো এখনই শীতের জামাকাপড় পড়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। পিন্টুর মা তার ছেলেকে নিয়ে দারুণ বেকায়দায় পড়ে গিয়েছেন। শীত আসার আগেই গোসল ছেড়ে দিয়েছে। এ নিয়ে সে টানা পনের দিন গোসল করে না। সাংবাদিকরা পিন্টুর বাড়ির সামনে ভিড় করেছেন। কেউ কেউ পিন্টুর ছবি পত্রিকায় ছেপেছেন এত্ত বড় শিরোনাম দিয়ে পিন্টুর এরকম সমস্যা দেখে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে শীগোকনা (শীতে গোসল করব না) নামে একটি সংগঠন।

পিন্টুর বাবা দেশের একজন সেরা মোটিভেশনাল স্পিকারকে বাসায় নিয়ে এসেছেন। পিন্টু এখন তার সামনে কম্বল মুড়ি দিয়ে আছেন। স্পিকার পিন্টুকে গোসল করার ব্যাপারে মোটিভেশন দিচ্ছেন। এতে বাইরে থাকা পিন্টুর পক্ষ নেওয়া শীগোকনা সংগঠনের লোকজন ইট ছুঁড়ছে। মোটিভেশনাল স্পিকার বড় একটি মাইক দিয়ে বিক্ষুব্ধ লোকজনের উদ্দেশ্যে বলছেন, দেখুন ভাইয়েরা, আপনারা ইট ছুঁড়বেন না।

এতে পিন্টুদের জানলার কাঁচ ভেঙে ঘরের আসবাবপত্র সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাও থাকছে না বিক্ষুব্ধ লোকজনের ইট ছোড়া, বরং আরও বেশি করে তারা ইট ছুঁড়ছে। মোটিভেশনাল স্পিকার সাহেব হুংকার দিয়ে বললেন, ‘খবরদার! আপনারা যদি আর একটি ইট-পাটকেল ছোঁড়েন তাহলে আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে শীতপাটকেল ছুঁড়বো। হঠাৎ শীকগোকনা সংগঠনের লোকজন ছুটে পালায়। পিন্টুকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

শীত নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই
জ্যোতি এখন সাইকোলজিস্টের সামনে বসে আছে। সাইকোলজিস্ট দেখতে মোটা। বারবার রুমে স্প্রে মারছেন। ইদানীং জ্যোতি শীত নিয়ে প্রচুর ভয় পাচ্ছে। তাই তার মা সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে নিয়ে এসেছেন। সাইকোলজিস্ট তাকে বারবার একটা কথাই বোঝাচ্ছেন, শীত নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। জ্যোতি নাক চেপে আছে, মাও কেমন দুর্গন্ধ পাচ্ছেন। জ্যোতির মা সাইকোলজিস্টকে কাঁচুমাচু হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার এখানে কি ইঁদুর মরেছে। দেখুন না, কী রকম একটা বিশ্রী গন্ধ আসছে। সাইকোলজিস্টের অ্যাসিস্টেন্ট লাফিয়ে উঠে বলল, স্যার তো শীতের ভয়ে এই একমাস গোসলই করেন না!

গোসল না করার উপকারিতা
শীতে গোসল না করার পরামর্শ দিয়েছেন শীত বিশেষজ্ঞ জনাব কোল্ড শীতল। তিনি শীতে গোসল না করার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেছেন-

ইন্ট্রোভার্টদের জন্য শীতে গোসল না করাটা এক ধরনের বড় সুযোগ। কারণ তারা আলাদা একটি মন নিয়ে আলাদা থাকতে চায়। কেউ যাতে তাদের বিরক্ত না করে সে জন্য গোসল না করে থাকতে পারে। গোসল না করার ফলে তাদের শরীর থেকে বিশ্রী গন্ধ আসবে। ফলে তাদের সঙ্গে কেউ মিশতে চাইবে না। যেটা তাদের কাছে একধরনের সুযোগ। তাই ইন্ট্রোভার্টদের শীতে গোসল না করাটাই বড় প্রাপ্য।

দেনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য শীতে গোসল না করার এক অভিনব কৌশল বের করেছেন শীতে গোসল না করা গবেষকরা। তাদের মতে কারো কাছে দেনা থাকলে সে গোসল না করে কাটিয়ে দিতে পারে গোটা শীতের মৌসুম। ফলে, পাওনাদারের কাছ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গোসল না করার কারণে তার দেনাদারের চেহারা বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। চেহারা বদলে গেলেই তো পাওনাদার আর দেনাদারকে চিনল না। ফলে গোটা শীতের মৌসুম দেনাদার পাওনাদারের কাছ থেকে মুক্তি পেয়ে গেল।

অজুহাত
মানুষের দুই হাত ছাড়াও আরো একটি হাত আছে। তৃতীয় হাতটির নাম অজুহাত। আসন্ন শীতকে নিয়ে আপনি এখনই কিছু অজুহাত বানিয়ে নিতে পারেন। যেমন অফিসে দু’একদিন না গিয়ে বাসায় বসে শীতের ঘুম দিয়ে বসকে বলতে পারেন, ‘কী যে বলব স্যার! যে ঠাণ্ডা পড়েছে আজকাল।

এই শীতে তো ঘর থেকে বের হওয়াটাই মুশকিল। তাই আসতে পারিনি।’

শীতের এরকম টেকনিক আবিষ্কার করেছেন শীতপলায়ন শীতু। শীত আসার আগেই শীতভীতু শীতু অস্থির হয়ে আছেন। যতই শীত আসছে ততই তিনি শীতের ভয়ে অস্থির হয়ে যাচ্ছেন!

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper