বাড়ির পাশে তীর্থ
টি. এম. মামুন
🕐 ২:৫৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২০
ভ্রমণকাহিনীর চিরচেনা কাঠামো ভেঙে বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে বইটি। লেখক জাকারিয়া মন্ডল পেশায় সংবাদকর্মী, গবেষক। দিনাজপুরের বিরামপুরের সন্তান। পেশাগত ও গবেষণার প্রয়োজনে ঘুরতে ঘুরতে কিছু তীর্থ দর্শনের সৌভাগ্য হয়েছে তার। সেগুলোর সবকটিই বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানার ভেতরে, বাড়ির আশপাশে। এ গ্রন্থের নাম তাই ‘বাড়ির পাশে তীর্থ’।
গ্রন্থটিতে রিপোর্টিং ও ফিচারের অভূতপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে। আয়েসি পর্যটকের আড়মোড়া ভেঙে পরিশ্রমী পরিব্রাজক হয়ে উঠেছেন লেখক। নিজস্ব ঢঙে বুনেছেন ভ্রমণসাহিত্য। তার চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার সঙ্গে যোগ হয়েছে সভ্যতা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, কিংবদন্তির ছিঁটেফোটা। আর বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, মহাপুরাণ-উপপুরাণের অল্প-বিস্তর আখ্যান। গুরুত্বপূর্ণ পৌরাণিক চরিত্রগুলোকে তুলে ধরেছেন বহুমাত্রিক আবেদনে। ‘বাড়ির পাশে তীর্থ’ গ্রন্থটিতে মোট সাতটি ভ্রমণগল্প স্থান পেয়েছে।
এসব গল্পের একটিতে প্রত্যন্ত হাওরের জগমোহিনী নামে এক বিশেষ সম্প্রদায়কে তুলে এনেছেন। তাদের ধর্ম ও জীবনাচার এবং বিথঙ্গল আখড়ার বিশালতা আমাদের বিস্মিত করে। একটি গল্পে চন্দ্রনাথ, আরেকটি গল্পে আদিনাথ পাহাড়ের প্রকৃত পরিচয় ও অপ্রচলিত ইতিহাস শিহরণ জাগায়। আর এক গল্প প্রতাপাদিত্যকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে। নতুন চোখে দেখে নিতে হয় হরিদাসের পাটবাড়ি, অদ্বৈত্যের পণাতীর্থ আর নির্মাই-এর শিববাড়ি।
গ্রন্থটিতে চোখে দেখা বিবরণের সঙ্গে নিপুণ কৌশলে তথ্যের সমাবেশ ঘটিয়েছেন জাকারিয়া মন্ডল। কঠিন বিষয়কে গেঁথেছেন সহজ ছন্দে। তাই একবার পাঠে ঢুকে পড়লে সাবলীলভাবে এগিয়ে যেতে হয়। মগ্ন হয়ে পড়তে হয়। নটরডেম কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়নের ছাত্র হলেও তার আগ্রহের পরিধি ইতিহাস ও নৃ-তত্ত্বসহ অনেক বিষয়ে।