নামাজের গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা কী?
খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ৮:৪০ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২০
নামাজ ইসলামের এক মৌলিক স্তম্ভ। একজন ব্যক্তির কালিমা পাঠের মাধ্যমে মুসলমান হওয়ার পর প্রথম যে কাজটি মুসলমান হিসেবে তার উপর ফরজ হয়, তা হলো নামাজ। এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, একজন মুসলমান ও একজন কাফেরের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী হলো নামাজ। (মুসলিম)। সুতরাং মুসলমান হিসেবে নামাজ আদায় আমাদের সবার আবশ্যিক কর্তব্য।
নামাজ শুধু আবশ্যিক কর্তব্যই নয়, পাশাপাশি মানসিক ও আধ্যাত্মিকতার দিক থেকে নামাজের বিভিন্ন উপকারী প্রভাব আছে। তন্মধ্যে কয়েকটি উপকারিতা উল্লেখ করা হলো।
প্রত্যেক জীবিত আত্মারই আধ্যাত্মিক চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা পূরণ না হলে কোনো ব্যক্তিই অন্তরে শান্তি লাভ করতে পারে না। নামাজের মাধ্যমে ব্যক্তি তার স্রষ্টার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। এর ফলে আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে একদিকে যেমন সে অন্তরের শান্তি অর্জন করে, অপরদিকে নিজের সত্তা ও অস্তিত্ব সম্পর্কে যথাযথ উপলব্ধি করতে পারে। হজরত আবু মুসা আল-আশয়ারী (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি তার প্রভুকে স্মরণ করে এবং যে ব্যক্তি তার প্রভুকে স্মরণ করে না, উভয়ের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে জীবিত ও মৃতের মধ্যে যে পার্থক্য। (বোখারি ও মুসলিম)।
নামাজ মানুষকে বস্তুজগতের সব ধরনের দাসত্ব ও বন্দিত্ব থেকে মুক্তি দান করে। ইমাম ইবনে তাইমিয়া বলেছেন, আসল বন্দি সে যার অন্তর তার প্রভুর জন্য বন্ধ থাকে এবং আসল দাস সে ব্যক্তি যার অন্তর তার ইচ্ছা-আকাক্সক্ষার দাস। নামাজের মাধ্যমে ব্যক্তি এ বন্দিত্ব ও দাসত্ব থেকে মুক্তি পেতে পারে।
নামাজ একজন ব্যক্তির মধ্যে নৈতিকতার ভিত্তি সৃষ্টি করে দেয়। কোনো ব্যক্তি যদি যথাযথ নামাজ আদায় করে, তবে নৈতিক গুণাবলি তার মাঝে সহজেই বিকশিত হওয়ার সুযোগ পাবে।
দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্য দিয়ে দৈনিক পাঁচবার স্মরণ করি, আমরা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর বান্দা। সব পরিচয়ের উপরে এটিই আমাদের পরিচয়। সুতরাং, নামাজের মাধ্যমে ঈমানকে আমরা প্রতিনিয়তই নবায়ন করে নিই।
নামাজের জামাতে ধনী-গরিব, সাদা-কালো একই কাতারে দাঁড়ায়। কোনো ধরনের বৈষম্যের ধারণা নামাজের জামাতে কাজ করে না। সবাই এক আল্লাহর বান্দা হিসেবে নামাজ আদায় করে। জামাতে নামাজের এ ব্যবস্থা থেকে আমরা একতার ধারণা ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা অর্জন করতে পারি। আল্লাহ আমাদের সবার জন্য নামাজ আদায়কে সহজ করে দিন।