ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ডিএসসিসির নির্দেশনা উপেক্ষা

তোফাজ্জল হোসেন
🕐 ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্প ও সড়ক সংস্কার কাজে ধুলা দূষণরোধে গত ৫ আগস্ট পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় নিদের্শনা ছিল, ঢাকায় ধুলাদূষণ রোধে সিটি করপোরেশনকে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী গত মাসের ৩ অক্টোবর ডিএসসিসির সচিব মো. মোস্তফা কামাল মজুমদার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সিটি করপোরেশনের প্রতিটি আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাও প্রকল্প পরিচালকদের নিদের্শ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করেছেন আঞ্চলিক কর্মকর্তা কর্মকর্তারা।

সচিবের নির্দেশনা অমান্য করায় গত ৪ নভেম্বর ফের ডিএসসিসির প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম ডিএসসিসির ৫ অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলীদের একই নির্দেশ দেন। তারপরও ধুলাদূষণ রোধে কোনো ব্যবস্থা নেননি আঞ্চলিক কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব বিষয় জানা গেছে।

ডিএসসিসির কয়েকজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ধুলাদূষণ রোধে নগর ভবন থেকে আঞ্চলিক অফিসে দুবার নির্দেশনা এসেছে। কিন্তু বাস্তবায়নে জনবল ও কারিগরী অবকাঠামোর কথা বলা হয়নি। আঞ্চলিক অফিসগুলোতে জনবল ও কারিগরী অবকাঠামো পর্যাপ্ত না থাকায় নিদের্শনা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।

বায়ুদূষণ রোধে বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণকে অবশ্যই আমলে নিতে হবে সরকার, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণায়, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকে। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, দূষণ নিরোধ দূরে থাক, তা নিয়ন্ত্রণেরও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। শুধু বায়ুদূষণই নয়, ঢাকা এখন সবচেয়ে উত্তপ্ত নগরীতে পরিণত হয়েছে। দূষণ ঠেকাতে যেসব আইন আছে, সেগুলো না মানার কারণে ঢাকার দূষণ দৃশ্যমান হচ্ছে।

মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ, ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের খোঁড়াখুঁড়িতে বর্তমানে ধুলাদূষণ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধুলাদূষণে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে ধুলাজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ। জানা গেছে, ঢাকা মহানগরীসহ বড় বড় শহরে ইউটিলিটি সার্ভিস প্রোভাইডিং ও উন্নয়ন কাজের সাইটে নিয়মিত পানি ছিটানো, মনিটরিং এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, ধুলাদূষণে রাজধানী ঢাকার নগরবাসী নাকাল হলেও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সোবহান বলেন, ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। ধুলাবালির নগরীতে পরিণত হয়েছে ঢাকা। রাজধানীর বাতাস এখন জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। কিছুদিন আগেও বিশ্বের বিভিন্ন শহরের মধ্যে তুলনামূলক বিচারে দেখা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহর ঢাকা।

এ বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানসমূহ নির্মাণসামগ্রী মাটি ও বালুর একটি অংশ রাস্তার পড়ে যাচ্ছে, যা পরে বায়ুদূষণ সৃষ্টির বড় কারণ। এর পেছনে ইটভাটা, গাড়ির কালো ধোঁয়া এবং যথেচ্ছ নির্মাণকাজও দায়ি। সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ও বিভিন্ন কাজে সমন্বয় করা প্রয়োজন। ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

 
Electronic Paper