ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ইছামতিতে ঢুকতে মানা

রাজিব হাসান, ঝিনাইদহ
🕐 ১:১০ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯

ভারত সীমান্ত নদী ইছামতি। যে নদীটি এলাকার মানুষ মাছ ধরা থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করেন। নদীপাড়ের হালদার সম্প্রদায়ের মানুষগুলো মাছ ধরে বিক্রি করে তাদের জীবন চালান। সেই নদীতে হঠাৎ করে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ কর্মী বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর গ্রামের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া ইছামতি নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করা হয়েছে।

শ্রীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, তাদের গ্রামের নিচ দিয়ে ইছামতি নদী বয়ে গেছে। নদীটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবার ভারতে চলে গেছে। এ গ্রামেই রয়েছে বিজিবির শ্রীনাথপুর ক্যাম্প। ক্যাম্পের নিচে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটি দিয়েছেন শ্রীনাথপুর গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম। 

গত ১০ দিন হলো তিনি হঠাৎ করে ওই নদীর মাঠপাড়া ও হালদারপাড়া এলাকায় দুটি বাঁধ দেন। মাঝে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জলাকার এ বাঁধ দিয়ে আটকে ফেলেন। আর এক সপ্তাহ হলো সেই আটকে ফেলা জলাশয়ে তিনি মাছ ছেড়েছেন। স্থানীয়রা বলছেন, তারা নানাভাবে বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শ্রীনাথপুর ছাড়াও পাশ্ববর্তী শ্যামকুড় গ্রামের মানুষ এ নদী নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তাই দখলকারীকে বাঁধ না দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। কিন্তু কোনো অনুরোধই কাজে লাগেনি।

হালদারপাড়ার সাধন হালদার জানান, তারা প্রায় ১৭টি পরিবারে শতাধিক মানুষ নদীর পাড়েই বসবাস করেন। এছাড়াও গ্রামে আরও হালদার সম্প্রদায় রয়েছে। যারা নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করেন। মাছ বিক্রির মাধ্যমে তাদের সংসার চলে। বাঁধ দেওয়ার কারণে তারা আর নদীতে নামতে পারছেন না। শরিফুল ইসলামের এক ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য। যে কারণে শরিফুল কোনো কিছুই মানতে চান না। তাদের সমস্যার কথাগুলো বলেছেন, কিন্তু তিনি গুরুত্ব দেননি। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হালদার সম্প্রদায়ের মানুষগুলো।

তবে শরিফুল ইসলাম জানান, নদীতে এখন পানি কম। তিনি খাবার জন্য কিছু মাছ ছেড়ে বড় করছেন। এটা তিনি শুনে করেছেন, কিন্তু কাদের কাছে শুনেছেন তা বলতে চাননি। তিনি নিজের ঘাড়ে দোষ নিয়ে বিষয়টির দিকে একটু খেয়াল রাখার অনুরোধ করেন। নদীতে মানুষের নামতে নিষেধের বিষয়টি ঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।

শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে একটু ব্যস্ত আছেন। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন সরকার জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 
Electronic Paper