অপরাধীর সাজা নিশ্চিত হোক
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:৩৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১১, ২০১৯
দেশে আইনের শাসন বজায় থাকলে কমে আসে অন্যায়-অপরাধ। গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন এ দুটি বিষয়ে উপস্থিতিতে যে কোনো দেশ এগিয়ে যায়। অন্যদিকে যে কোনো একটির ঘাটতির কারণে পিছিয়ে পড়ে সমাজ, সমস্যায় পড়ে সাধারণ মানুষ। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, আইনের শাসনে এখনো বাংলাদেশ পিছিয়ে। বিচারের বাণী এখানে নিভৃতে কাঁদে। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও বিভিন্ন সময়ে বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন।
গত মঙ্গলবার বিশ্ব মানবাধিকার দিবসের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধী যেই হোক, শাস্তি তাকে পেতেই হবে। আমাদের সব থেকে যেটা প্রয়োজন মানবাধিকার রক্ষা করার জন্য আইনের শাসন নিশ্চিত করা। অপরাধীকে শাস্তি পেতেই হবে-এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। মানুষের ন্যায় বিচার নিশ্চিতে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকারীদের দায়মুক্তি দিতে ১৯৭৫ সালে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল। হত্যাকারীরা দম্ভ করে বলত তাদের কেউ বিচার করতে পারবে না। কারণ তাদের ‘ইনডেমনিটি’ (দায়মুক্তি) দেওয়া হয়েছিল।
এ অনুষ্ঠানে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার মায়ের কী অপরাধ ছিল বা আমার দুই ভাইয়ের? তারা তো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাদের নবপরিণীতা বধূদের কী অপরাধ ছিল? আমার ছোট্ট ভাই রাসেলের কী অপরাধ ছিল? দায়মুক্তির পর হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোট চুরি করে দুজন খুনিকে পার্লামেন্টে সদস্য হিসেবে বসানো হয়েছিল। এক খুনিকে বিরোধী দলের নেতার চেয়ারে বসানো হয়েছিল। আরেক খুনিকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করা হয়েছিল।
হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফেরার পরও বিচার চেয়ে মামলা করতে পারেননি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমি ফিরে এসে মামলা করতে গিয়েছি। বলেছে, আপনি মামলা করতে পারবেন না। কারণ তাদের ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছিল। ঠিক এভাবেই এই দেশে পরিবর্তন আনা হয়েছিল মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। আমি অধিকার পাইনি আমার বাবা-মায়ের হত্যার বিচার চাইতে বা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে।
মানবাধিকার ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্য আমলে না নিয়ে উপায় নেই। দেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে অনেক সমস্যাই কমে যাবে, শান্তি ফিরবে জনজীবনে- বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা প্রত্যাশা করি, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সমুন্নত রাখতে সংশ্লিষ্ট প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন। অপরাধীদের সাজা নিশ্চিতই হোক মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম সোপান।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228