ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সরকারের পাওনা শোধে ব্যর্থ চার সিটি

জাফর আহমদ
🕐 ১০:৩৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯

আয় দিয়ে ব্যয়ভার নির্বাহ করতে পারছে না ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। এ কারণে সরকারের পাওনা (ঋণ পরিসেবা দায়-ডিএসএল) মূল অর্থ বা এ টাকার সুদ বাবদ কোনো অর্থই পরিশোধ করতে পারছে না। পাশাপাশি ঢাকা সিটি করপোরেশন দুই ভাগে বিভক্ত হওয়ার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও দুই সিটি করপোরেশনের কোনোটাই অবিভক্ত করপোরেশনের ঋণের কত ভাগ কোনটি দেবে-সে জটিলতার কারণে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না।

সরকারের এ পাওনা টাকা পরিশোধ করতে হলে সরকারের সহায়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি বকেয়া পাওনা কোনো সিটি করপোরেশন কত পরিশোধ করবে-এ ব্যাপারে নির্দেশনা চায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়।

সভায় সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগভুক্ত চার সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, চট্টগ্রাম ওয়াসা, হোটেল ইন্টারন্যাশনাল (সোনারগাঁও), বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বেসিক ব্যাংক, বেসরকারি বিমান চলাল কর্তৃপক্ষ, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড, পিকেএসপি, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), বাংলাদেশ ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক ও বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।

সরকারের এসব বিভাগ, দপ্তর-অধিদপ্তরের মধ্যে ৪ সিটি করপোরেশনের কাছেই সরকারের সুদে-আসলে পাওনা (ডিএসএল) এক হাজার ১১৭ কোটি ৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। সিটি করপোরেশনগুলো হলো ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনা। খুলনা সিটি করপোরেশনের কাছে পাওনা ৩২১ কোটি ৯৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা; রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাছে পাওনা ২১৪ কোটি ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা; ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছে পাওনা ৪৭৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছে পাওনা ১০৬ কোটি ৭১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। এসব অর্থ পরিশোধে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে তাগাদা দেওয়া হয়।

বৈঠকের কার্যবিবরনী থেকে জানা যায়, চার সিটি করপোরেশনকে পাওনা অর্থ যথা সময়ে ফেরত দেওয়ার তাগাদা দেওয়া হয়। বৈঠকে উপস্থিত চার সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধিরা এ ব্যাপারে জবাব দেন। এ বিষয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঢাকা সিটি করপোরেশন বিভক্ত হওয়ার সময় কোন ক্রেডিট লাইনে কোন পাওনা পরিশোধ করা হবে- এ ব্যাপারে নির্দেশনা না থাকার কারণে সরকারের পাওনা পরিশোধ করা হয়নি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয় সিটি বিভক্ত হওয়ার পর বড় এরিয়া পড়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে। কিন্তু আগে যে নগর শুল্ক ছিল-এখন সে নগর শুল্ক নেই। ঢাকা সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয় নগর শুল্ক হার বাড়ালে ডিএসএল পরিশোধ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সরকারের পাওনা অর্থ কোন ক্রেডিট লাইনে পরিশোধ করতে হবে- সে ব্যাপারে নির্দেশনা জরুরি।

রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের কাছে সরকার পাওনা দাবি করলেও এই দুই সংস্থা কোন দলিল পায়নি। দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি বৈঠকে জানানো হয়, সরকারের পাওনা টাকা পাওয়া তো দূরে থাক এ ব্যাপারে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য দুই সিটি করপোরেশনের সাথে কোন চুক্তিই সম্পাদন হয়নি। সরকার রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের কাছে দাবিকৃত অর্থের দলিলাদি বিষয়ে পর্যালোচনা করার জন্য পরামর্শ দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ট্রেজারি ও ঋণ অনুবিভাগ।

 
Electronic Paper