ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সৌদিতে কর্মী পাঠানোয় প্রয়োজন সততা-নজরদারি

সম্পাদকীয়
🕐 ৮:৫৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯

বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি হচ্ছে সৌদি আরবে। দেশটিতে বাংলাদেশি কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশিরা তাদের দায়িত্বের প্রতি বেশ নিষ্ঠাবান, এই সুনাম আছে। সরকার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী তৈরি করে সৌদি আরবে পাঠানোর ওপর গুরুত্বারোপ করছে। প্রায় আট বছর পর নতুন করে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে সৌদি আরব এবং ১০ হাজার কর্মী নেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসে চাহিদাপত্র পাঠায়।

কূটনীতিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে ধারাবাহিকভাবে কর্মী নেওয়ার অংশ হিসেবে এই চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। এতে গাড়িচালক, মালি ও গৃহকর্মী নেওয়ার আগ্রহ দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার আশা করছে, মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে গৃহ ও কৃষিক্ষেত্রে কাজ করার জন্য প্রতিমাসে ৩০ হাজার কর্মী পাঠানো সম্ভব হবে।

সৌদি আরবে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী সরকারের নজরদারিতে রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে দেশটিতে কর্মী পাঠানো হবে। চুক্তির পর কিছু নারী গৃহকর্মী সৌদি আরবে গেছে। বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ১২টি ক্যাটাগরিতে দেওয়া হয় সৌদি আরবের ভিসা। গৃহকর্মী এবং গাড়িচালক, মালি ও অন্যান্য ক্যাটাগরিতে পুরুষ কর্মীদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে।

দেশটিতে যেতে আগ্রহীদের হতে হবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং অপরাধে সংশ্লিষ্ট থাকা যাবে না। এছাড়া নিজের কাজের ওপর প্রশিক্ষণ এবং সৌদি আরবের পরিবেশ সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে। এ দেশ থেকে জীবিকার সন্ধানে মানুষ সে দেশে যাবে, আয় করবে, পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো থাকবে, দেশের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে অবদান রাখবে এটাও খুশির কথা। কিন্তু বিদেশে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো কিছু নয়। বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করে কত মানুষ সর্বস্ব হারিয়েছেন তার শেষ নেই।

বিদেশে পাঠানোর নাম করে অসৎ আদম ব্যবসায়ীরা মেরে দিয়েছেন বিদেশ গমনেচ্ছু দরিদ্র মানুষের টাকা। অথচ বিদেশ গমনেচ্ছু অনেকেই জমি বিক্রি করা টাকা এনে তুলে দিয়েছেন আদম ব্যবসায়ীর হাতে। তারা তো বিদেশে যেতে পারেননি, সেই টাকা খুইয়ে পথে বসেছেন।

আদম ব্যবসায়ীরা অনেককে বিদেশের মাটিতে নিয়ে গেছেন ঠিক কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা বিপদে পড়েছেন। ঠাঁই হয়েছে কারাগারে। অনেকের জুটেছে দোরারা। নারী কর্মী হিসেবে যারা গিয়েছেন তাদের অনেকে হয়েছেন যৌন নির্যাতনের শিকার। কিছু অসাধু ব্যক্তি চক্র তৈরি করে আদম ব্যবসার নামে এই জালিয়াতি করেছে এবং করছে যার কুফল ব্যক্তি এমনকি রাষ্ট্রকেও স্পর্শ করেছে। সৌদি আরবে বাংলাদেশি গৃহকর্মীদের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনা ইতিমধ্যে বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সম্পদ হচ্ছে মানুষ। বিদেশে এই মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারলে তার মধ্য দিয়ে হবে দেশ ও জাতির উন্নতি। সৌদি আরবে লোক পাঠানোর ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সির সততা জরুরি। এক্ষেত্রে সরকারের নজরদারিও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। দেশটিতে যাওয়ার পর কর্মীরা যাতে কোন ধরনের হররানির শিকার না হন সে দিকেও নজর রাখা প্রয়োজন। সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহল এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper