সাক্ষাৎকার
শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরিতে কাজ করছি
আবুল বাশঅর মিরাজ
🕐 ২:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেছেন, শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস তৈরিতে আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ বেশ কিছু পরিকল্পনার কথা বলেন। তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থেই আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চাচ্ছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কিছু উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অনুসরণ করতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক হবেন শিক্ষার্থীবান্ধব। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মিলেমিশে শিক্ষা-গবেষণা থেকে শুরু করে সকল কাজ আন্তরিকতার সাথে করবে। আমি চাই প্রভোস্ট মহোদয়, হাউস টিউটর মহোদয় সংশ্লিষ্ট হলগুলোতে সবসময় খোঁজ খবর নিবেন। শিক্ষার্থীরা তাদের সকল অভিযোগ তাদের মাধ্যমে আমাদেরকে জানাবে। শিক্ষার্থীরা যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে। আলোচনার মাধ্যমে সকল সমস্যার সমাধান করা যায়, আর আমি সেই কাজটিই করতে চাই।
স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা হবে সবাইকে
উপাচার্য বলেন, সকল শিক্ষার্থীকে স্বাস্থ্য-বীমার আওতায় আনা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর চিকিৎসার জন্য ৫০ ভাগ খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে। আগামী বছর থেকে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মাসিক ২০ টাকা নেওয়া হবে এবং আমরা এই সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করে একটি ফান্ডটি গঠন করব। এই ফান্ড থেকে একই সময়ে একজন শিক্ষার্থীকে একই সময়ে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা খরচ বহন করা হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দুর্ঘটনায় পড়লে ক্ষতিপূরণের জন্য আলাদা ফান্ড গঠন করা হবে। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা কর্ণার স্থাপনের জন্যও আমরা কাজ করছি।
দুর্নীতি মাদক ও র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস তৈরি করতে চাই
উপাচার্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলের অংশগ্রহণে মাদক, গেস্টরুম, র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস ঘোষণা করা হবে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগে কোনো প্রকার স্বজনপ্রীতি করা হবে না।
যুগোপযোগী কোর্স ক্রেডিট চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি
উপাচার্য বলেন, বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে ১২০-১৩০ ক্রেডিটের বেশি পড়ানো হয় না। কিন্তু বাকৃবিতে স্নাতক পর্যায়ে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ১৮০-১৯০ ক্রেডিট পড়তে হয়। এতে প্রতি সেমিস্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা সেমিস্টার শেষ করতে সময় পান না। এমনকি পড়াশোনায় বেশি চাপ এবং যথেষ্ট ছুটি না থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা কমে যাচ্ছে। তাই র্যাংকিংয়ে বিশ্বের প্রথম দিকের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমতা রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের কোর্স ক্রেডিট কমানোর জন্য চেষ্টা করছি।
নিরাপত্তার চাদরে পুরো ক্যাম্পাস
উপাচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা প্রতিটি হলে সিসিটিভি লাগিয়েছি। এছাড়াও আমাদের ক্যাম্পাসের প্রায় সব জায়গাতেই সিসিটিভি রয়েছে। হলগুলোতে আগের চেয়ে বেশি মনিটরিং চালু করা হয়েছে। আমরা প্রভোস্ট, হাউস টিউটর মহোদয়দেরকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছি।
তৈরি করা হবে বায়োডাইভার্সিটি কেন্দ্র
আমাদের ক্যাম্পাসটি পুরোটিই সবুজে আচ্ছাদিত। যারাই এ ক্যাম্পাসে এসেছেন তারাই এটি দেখে মুগ্ধ হয়েছে। ক্যাম্পাসটিকে নিয়ে আমাদের বেশ কিছু পরিকল্পনা আছে। আমরা সেভাবেই এগোচ্ছি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি আলাদা বায়োডাইভার্সিটি কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কৃষি ও ফসল ব্যবস্থাপনার পদ্ধতির অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। এজন্য জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃষি উন্নয়ন এবং ফসল উৎপাদনের ধারাবাহিকতা
বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরলস গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান
উপাচার্য
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
