ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফিরে আসুক সোনালি আঁশের সোনালি দিন

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৮:২৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯

একটা সময় ছিল যখন দেশের মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্য বইয়ে ‘পাট’ রচনাটি ছিল অবশ্য পাঠ্য। অবশ্য পাঠ্য হওয়ার পেছনে অবশ্যই কিছু কারণও ছিল। পাঠ্যবইয়ের ‘পাট’ রচনা পড়লেই বোঝা যেত পাট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কত গুরুত্বপূর্ণ। পাটকে বলা হয় সোনালি আঁশ। দেশের রপ্তানি আয়ের প্রথম পণ্যই ছিল কাঁচাপাট ও পাটজাত পণ্য। কিন্তু পাটের সেই সোনালি দিনগুলো খুব দ্রুত হারিয়ে যেতে শুরু করে। এক পর্যায়ে পাট পরিণত হয় কৃষকের গলার ফাঁসে।

দেশের পাটখাত মানেই লোকসানি খাত। কাঁচাপাটের কদর নেই, পাটজাত পণ্যের বাজার নেই। সরকারি-বেসরকারি অনেক পাটকল বন্ধ হতে শুরু করে। হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হন, যেসব পাটকল কোনোরকমে টিকে আছে তাতেও সমস্যার অন্ত নেই, উৎপাদন বন্ধ আবার উৎপাদিত পণ্য বিক্রি হচ্ছে না গুদামে পড়ে থাকে।

মাসের পর মাস বেতন না পেয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করেছেন শ্রমিকরা। তাদের ক্ষুধার্ত মুখের ছবি মানুষের মনে মায়া তৈরি করেছে কিন্তু তাতে তো সমস্যার সমাধান হবে না, সমস্যার সমাধান হতে হলে যে পণ্যের ওপর এ শিল্প খাতটি দাঁড়িয়ে সেই পাটের বাজার তৈরি করতে হবে।

খুবই আনন্দের কথা, এ ক্ষেত্রে বেশ ইতিবাচক অগ্রগতি ঘটেছে। খোলাকাগজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাটের বাজার দিন দিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানিতে কিছুটা ভাটা দেখা দিলেও উল্টোচিত্র পাট খাতে। জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে পাটজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৩ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। অর্থের বিচারে খুব বড় না হলেও পাটজাত পণ্য রপ্তানির অর্থের পুরোটাই দেশে থাকছে, এক সময়ের দেশের প্রধান রপ্তানিজাত পণ্যের নতুন করে এ চাহিদা তৈরি হওয়া বিশেষ গুরুত্ববহ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্য যাচ্ছে ১৩৫ দেশে। যেসব দেশ দীর্ঘদিন ধওে বাংলাদেশের পাট নিচ্ছে তাদের পাশাপাশি তালিকায় যুক্ত হয়েছে অনেক নতুন দেশ। পাটের বাজার বাড়ার সুযোগ আরও বাড়বে, কেন না জাতিসংঘও পাটসহ কয়েকটি প্রাকৃতিক তন্তুকে বিশ্বের টেকসই উন্নয়নের কাজে ব্যবহারের জন্য একটি প্রস্তাব পাস করেছে।

দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা ও নানা প্রক্রিয়া শেষে ২১ নভেম্বর জাতিসংঘে এই প্রস্তাব পেশ করে বাংলাদেশ, ৬৮টি দেশের সমর্থনে এটি পাস হয়। বিশ্বের সর্বোচ্চ ফোরামের এই অবস্থান আমাদের জন্য একটা বড় সুখবর। বাংলাদেশকে এই সুবিধাটা পুরোপুরি কাজে লাগাতে হবে। সারা বিশ্বে আমাদের পাটজাত পণ্যের বাজার খুঁজে বের করতে হবে।

১৩৫টি দেশে পাট রপ্তানি হচ্ছে, যে পরিমাণ পাট রপ্তানি হচ্ছে তা বাড়ানোর সুযোগ নিশ্চয়ই রয়েছে সে সুযোগও তৈরি করতে হবে। সব মিলিয়ে পাটের দিকে সরকারের যে মনোযোগ তা বাড়াতে হবে, কৃষক যাতে পাটের ন্যায্যমূল্য পায় তা নিশ্চিত করতে হবে, পাটকলগুলোতে কর্মচাঞ্চল্য তৈরি করতে হবে। এসব কিছু করা গেলে ‘সোনালি আশ’-এর সোনালি দিন ফিরবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper