কিশোরগঞ্জে ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য
সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ
🕐 ৭:৩৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে প্রায় দুই লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিদিন এ শহরে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন ফার্মেসিত যান জীবন রক্ষাকারী ওষুধ কিনতে। আর সেসব ফার্মেসিতেই যদি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হয় তাহলে জনস্বাস্থ্য পড়ে ঝুঁকিতে।
কিশোরগঞ্জ শহরে প্রায়শই দেখা যায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে বিভিন্ন ফার্মেসি মালিকদের জরিমানা করছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন। এমন হীন কার্যকলাপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য জনসচেতনতা অতিব প্রয়োজন বলে ধারণা করছেন ভোক্ত অধিকার অধিদফতর ও জেলা প্রশাসন। জেলা ঔষধ প্রশাসন এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে আসছেন। তারপরও অজ্ঞাত কারণে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না।
জনজীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির দায়ে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে নেজারত ডেপুটি কালেক্টরেট ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মীর মো. আল-কামাহ তমাল, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব মাহমুদ পাশা ও ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক ফুয়ারা ইয়াসমীনের নেতৃত্বে জেলা শহরের স্টেশন রোডে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
সেই মোবাইল কোর্টে ধরা পড়ে মিতালী ফার্মেসি, অনিক মেডিকেল হল ও হোসেন মেডিকেল হলের মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রির হীন কার্যকলাপ। যার দায়ে মিতালী ফার্মেসিকে ৩০ হাজার, অনিক মেডিকেল হলকে ১০ হাজার ও হোসেন মেডিকেল হলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং কঠোরভাবে বলে দেওয়া হয় এমন হীন কার্যকলাপ যদি বিরত থাকা না হয় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল কোর্ট চলাকালীন জেলা ওষুধ সমিতির সভাপতি হানিফ খান জরিমানা না করতে সুপারিশ করতে গেলে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব মাহমুদ পাশা বলেন, আরেকবার যদি আপনি সুপারিশ করতে আসেন তাহলে আপনার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গালিব মাহমুদ পাশা জানান, ড্রাগ অ্যাক্ট ১৯৪০ সালের আওতায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রয়ের দায়ে তাদের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে কিশোরগঞ্জের জনগণের কল্যাণে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জেলা ঔষধ প্রশাসনের তত্ত্বাবধায়ক ফোয়ারা ইয়াসমিন জানান, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি যেন করতে না পারে সেজন্য নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করি।
জেলা ক্যাবের সভাপতি আলম সারোয়ার টিটু জানান, কিশোরগঞ্জে প্রায় ৭০-৭৫ ভাগ ফার্মেসিতে মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি হয়। কিশোরগঞ্জে রেজিস্ট্রার্ড কোনো ফার্মাসিস্ট নেই। বেশিরভাগ ওষুধ কেনা হয় মিডফোর্ড থেকে। গত সপ্তাহে ভোক্ত অধিকার ও জেলা প্রশাসন একত্রে বিভিন্ন ফার্মেসিতে অভিযান পরিচালনা করে।
আমি মনে করি মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি মানে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। যারা মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি করে তাদের শুধু জরিমানা নয় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেওয়া উচিত।