বাংলাদেশি পাটজাত পণ্য যাচ্ছে ১৩৫ দেশে
জাফর আহমদ
🕐 ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
দেশে প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক রপ্তানি ভাটা। এর প্রভাব পড়েছে পুরো রপ্তানি আয়ে। দেশের প্রধান কর্মসংস্থান তৈরি পোশাক শিল্পজুড়ে মৃদু কাঁপন তৈরি করেছে। চলতি বছরের প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথেও রপ্তানি আয় অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এরই মধ্যে আশা জাগিয়েছে দেশের পাট শিল্প। এক মাসের ব্যবধানে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ। রপ্তানিকারকরা বলছেন, কয়েক বছর আগে ভারত পাট আমদানিতে এন্টি ডাম্পিং নীতি আরোপ করায় বাংলাদেশের পাট রপ্তানিতে ধস নামে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিকল্প বাজারের অনুসন্ধান শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, নতুন বাজার পাওয়ায় বেড়েছে পাটজাত পণ্য রপ্তানি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪০৪ দশমিক ৭৯ মিলিয়ন ডলার। আগের একই সময়ে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৩৫১ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। পাঁচ মাসে পাটজাত পণ্য থেকে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৫৩ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। অর্থের বিচারে খুব বড় না হলেও পাটজাত পণ্য রপ্তানির অর্থের পুরোটাই দেশে থাকছে, এক সময়ের দেশের প্রধান রপ্তানিজাত পণ্যের নতুন করে এ চাহিদা তৈরি হওয়াকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ জুট মিল এসোসিয়েশন মহাসচিব আ. বারিক মনে করেন ভারত যে এন্টি ডাম্পিং নীতি নিয়েছিল তা বাংলাদেশের জন্য ‘শাপেবর’ হয়েছে, বাংলাদেশ নতুন বাজার খুঁজে পেয়েছে। পাশাপাশি এবার ভারতও বাংলাদেশ থেকে বেশি পাট নিয়েছে। তিনি খোলা কাগজকে বলেন, গত পাটের মৌসুমে ভারতে পাটের উৎপাদন কমে যায়। এতে সেখানকার পাটকলগুলো চালিয়ে নিতে বাংলাদেশ থেকে পাটের সুতা বা সুতলি বা টুয়াইন আমদানি বাড়িয়ে দেয়।
পাটের প্রধান বাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। ইরানের গালিচা বানানোর কাজে বাংলাদেশের পাটের সুতা বা টুয়াইন আমদানি করে থাকে। আফ্রিকার কয়েকটি দেশেও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। ইরানের প্রতি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ও মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ বিগ্রহ ইত্যাদি কারণে পাট রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। সম্প্রতি যুদ্ধ কমে এলে বাংলাদেশের পাটজাত পণ্যে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া শুরু হয়। এছাড়া ইরান তৃতীয় দেশের মাধ্যমে পাটজাত পণ্য আমদানি বাড়িয়ে দেয়। এ সব কারণে সাম্প্রতিক সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি থেকে আয় বেড়েছে। বাংলাদেশ জুট মিল এসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ১৩৫টি দেশে পাটজাত পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।