ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সৌদিতে ফের নির্যাতনের অভিযোগ

বাংলাদেশি নারী কর্মীদের সুরক্ষা দিন

সম্পাদকীয়
🕐 ৭:২২ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৫, ২০১৯

জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেক শ্রমিকই যাচ্ছেন সৌদি আরবে। দেশটিতে চাকরি করে অতীতে কেউ কেউ পরিবারের স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে পারলেও বর্তমানে দেখা মিলছে নানামুখী সমস্যার। বৈধ কাগজপত্র, কাজ করার অনুমতি থাকলেও অনেক শ্রমিককেই জোরপূর্বক পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। সহায় সম্বল হারিয়ে এ প্রান্তিক মানুষরা ফিরছেন দেশে।

অন্যদিকে নারীদের জন্য এ সমস্যা আরও প্রকট। গৃহকর্মীর নামে সৌদি আরবে শ্রমিকদের যৌনদাসী হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ইতিপূর্বে বেশ কয়েকজন প্রবাসী শ্রমিক অভিযোগ জানালেও সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি জোরালো ব্যবস্থা। কাউকে কাউকে জীবিত ও মৃত ফিরিয়ে আনলেও সমস্যার মূলে হাত দেওয়া হয়নি। বহির্বিশ্বের দেশগুলোতে বাংলাদেশি দূতাবাসের বিরুদ্ধেও রয়েছে এন্তার অভিযোগ। দেশেও সরকারি-বেসরকারি সংশ্লিষ্ট মহল যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করছে না।

সম্প্রতি মরিয়ম আক্তার নামে সৌদি আরব প্রবাসী এক বাংলাদেশি নারী নির্যাতনের শিকার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মরিয়ম মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মেয়ে। গ্রামের দালালের মাধ্যমে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জীবিকার তাগিদে দুই ছেলেকে দেশে রেখে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। সেখানে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সম্প্রতি তার নির্যাতন ও যৌন হয়রানির কথা জানিয়ে একটি বার্তায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে দেশবাসীর সাহায্য চান। পরিবারের সদস্যরা দালাল, গ্রামের মেম্বার, মুরব্বিদের জানিয়েও দেশে ফেরাতে পারছেন না মরিয়মকে।

বার্তায় মরিয়ম বলেন, ‘পুরো দেশবাসীর কাছে আমি জীবনভিক্ষা চাই। আমার লেখাপড়া নেই। নির্যাতনের ভিডিও ছাড়তে পারি না। আমারে ওয়ার দিয়া খুব মারে, শরীরের লজ্জাস্থানগুলোতে ওয়ার দিয়া মারে। আমারে বাঁচাও, আমারে সৌদি থেকে লইয়া যাও। আমারে বাংলাদেশে লইয়া যাও। তোমাদের কাছে আমি জীবন ভিক্ষা চাই। আমি বাঁচতাম না, আমারে বাইচ্চা থাকতে কেউ নিল না দেশও। আমি বাঁইচা দেশ আইতাম না। ওইটা খারইতে পারি না।’

এদিকে নির্যাতনের বিষয় অস্বীকার করে সংশ্লিষ্ট দালাল বলেন, ‘আমারে নির্যাতনের ভিডিও, রেকর্ড দেখাইছে। তারা বলছে, আমি দেশে ফিরাই আইনা দিতাম। আমার পক্ষে দেশে আনা সম্ভব না। আমি ঘর পাল্টাই দিতে পারব। আমি খুঁজ নিয়েছি এগুলো মিথ্যা কথা বলছে।’ এভাবে দায় অস্বীকারের প্রবণতা দেশে বিদেশে সর্বত্রই পরিলক্ষিত হয়। যে কারণে শ্রমিকরা বরাবরই থেকে যাচ্ছে আড়ালে, হচ্ছে নির্যাতন ও নিগ্রহের শিকার।

আমরা মনে করি, বাস্তবতার নিরিখে চুক্তিপত্র করেই জনশক্তি রপ্তানি করা উচিত। দেশের মানুষকে সুরক্ষা দেওয়া সরকারের কর্তব্য। বিষয়টি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টরা আমলে নিয়ে নির্যাতিত নারী-পুরুষ শ্রমিককে সুরক্ষা দিতে এগিয়ে আসা সময়ের দাবি। জনসম্পদকে সঠিক পন্থায় ব্যবহারেও নিতে হবে সময়োপযোগী ভূমিকা।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper