ষষ্ঠ স্বর্গে মেসি
ক্রীড়া ডেস্ক
🕐 ১২:১৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৯
খবরটা আগেই ফাঁস হয়ে গেছে। ষষ্ঠবারের মতো ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকী তথা ব্যালন ডি’অর জিতে গেছেন লিওনেল মেসি। খবরটা স্রেফ গুঞ্জন ছিল কিনা এটা যাচাইয়ের অপেক্ষা ছিল। না, ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশটটা মিথ্যে ছিল না। ঠিকই বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়েছেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন অধিনায়ক মেসি।
সোমবার রাতে মেসির হাতে তুলে দেওয়া হয় বর্ষসেরার মুকুট সোনালি বল। ২০১৫ সালের পর আবারো সিংহাসনে ফিরলেন তিনি। মাঝের এই সময়টুকু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও লুকা মডরিচ দাপট দেখিয়েছেন। মেসির শ্রেষ্ঠত্ব উদ্ধারের লড়াইয়ে অবশ্য এই দুজনের কেউ মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না।
লিভারপুলের ডাচ ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইককে হারিয়ে বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়েছেন মেসি। এ বছর ফিফার বর্ষসেরার লড়াইয়েও ফান ডাইককে হারিয়েছিলেন ৩২ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর। বছরজুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের দ্বিতীয় স্বীকৃতি পেলেন তিনি।
২০১৮-১৯ মৌসুমে ক্লাব বার্সেলোনা কিংবা জাতীয় দল আর্জেন্টিনার হয়ে খুব বড় সাফল্য পাননি মেসি।
অর্জন বলতে কেবল কাতালান ক্লাবটির হয়ে স্প্যানিশ লা লিগার ট্রফি জয়। তবে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে মেসি বরাবরই ছিলেন উজ্জ্বল। গোল করেছেন পঞ্চাশটিরও বেশি। তাতে ম্লান হয়ে গেলেন ফন ডাইক।
ইতিহাসের চতুর্থ ও দশ বছর পর প্রথম ডিফেন্ডার হিসেবে বর্ষসেরা হওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন ফন ডাইক। লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের মূল ভিতটা তিনিই গড়ে দিয়েছিলেন। জাতীয় দল নেদারল্যান্ডসকে তিনি পৌঁছে দিয়েছিলেন ইউরোপের নতুন টুর্নামেন্ট উয়েফা নেশনস লিগের ফাইনালে।
এ ছাড়া সারা বছর ইংলিশ লিগ ও ইউরো বাছাইপর্বে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু শুধুই একজন ডিফেন্ডার বলেই সেরার স্বীকৃতি উঠল না তার হাতে। বিজয়ের মঞ্চের উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে থাকলেন মেসি। তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ও গতবারের জয়ী রোনালদো এবার তৃতীয় সেরা হয়েছেন। তাকে ছাড়িয়ে রেকর্ড সর্বোচ্চ ষষ্ঠবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতলেন মেসি।
ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশটে পর্তুগিজ উইঙ্গারকে চতুর্থ সেরা দেখানো হয়েছিল। যদিও ওই স্ক্রিনশটে শীর্ষ দুই ফুটবলার ছাড়া অন্যদের ফলাফল খুব একটা মেলেনি। পরশু রাতে ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায় শীর্ষ সাতজনের চার ফুটবলারই লিভারপুলের। সাদিও মানে হয়েছেন চতুর্থ, সালাহ হয়েছেন পঞ্চম। অ্যালিসন বেকার হয়েছেন সপ্তম। ব্রাজিলিয়ান সেনসেশন অ্যালিসন অবশ্য বর্ষসেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার পেয়েছেন।
মেয়েদের ব্যালন ডি’অর জিতেছেন মার্কিন ফুটবলার মেগান র্যাপিনো। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপ জয়ের আসল কাণ্ডারী ছিলেন এই ফরওয়ার্ড। কিন্তু পরশু প্যারিসের ঝলমলে রাতের সব আলো ছিল মেসির দিকেই। ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর দেওয়া বর্ষসেরার ষষ্ঠ ট্রফি জয়ের ইতিহাস গড়ার পর মেসি বলেছেন, ‘এটা আমার ষষ্ঠ ব্যালন ডি’অর। সম্পূর্ণ অন্যরকম মুহূর্ত। আমার স্ত্রী বলে, কখনো স্বপ্ন দেখা থামিও না এবং কঠোর পরিশ্রম করো ও উপভোগ করো। আমি ভাগ্যবান। আরও অনেক দিন খেলে যেতে চাই। যদিও একদিন অবসর নিতেই হবে। এটা কঠিন হবে।’
কিন্তু ৩২ বছর বয়সী মেসি ঠিক কবে অবসর নেবেন সেটা খোলাসা করলেন না। বিষয়টা শরীর ও মনের ওপর ছেড়ে দিলেন আর্জেন্টিনা ও আর্জেন্টিনা অধিনায়ক, ‘ক্লাবের সবাই আমাকে জানে। এই ক্লাব নিয়ে আমার অনুভূতি (চুক্তিপত্র) সই কিংবা যেকোনো ভূমিকা ছাপিয়ে যায়। তাই কোনো সমস্যা নেই। অনেক আগেই বলেছি শরীরের সায় দেওয়ার ওপর সবকিছু নির্ভর করছে। তবে এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে খুব ভালো লাগছে। আশা করি আরও অনেক দিন খেলতে পারব।’
ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে যোগ দেননি মেসির চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রোনালদো। এনিয়ে পর্তুগিজ যুবরাজকে খোঁচা দিয়েছেন ফন ডাইক। মেসি খোঁচা না দিলেও বাকি রাখেননি, ‘সে পারেনি বলেই আসেনি। এটা আলোচনার বিষয়বস্তু বানানো ঠিক হবে না।’