ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ | ১২ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

নষ্ট হয়েছে লক্ষাধিক হেক্টর জমির ধান

দিনাজপুর প্রতিনিধি
🕐 ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৯

দিনাজপুরে এক লাখ ৬৫৪ হেক্টর জমির সুগন্ধি ব্রি-৩৪ বা জিরা কাটারী ধানে ব্লাস্ট রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। যে সময় ক্ষেতে সবুজের সমারোহ দেখা যাওয়ার কথা, ঠিক সে সময় ধানের পাতা সোনালী রঙ ধারণ করেছে। এ অবস্থায় কৃষি বিভাগ আগামীতে এই সুগন্ধি ধান চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করাসহ মাঠ থেকে একেবারে তুলে নেয়ার কথা ভাবছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ক্ষেতে ব্লাস্টসহ নানা রোগের প্রকোপ মারাত্মক রূপে ধারণ করেছে। যে সময় ধান ক্ষেতে সবুজের সমারোহ থাকার কথা, সে সময় সোনালী রঙ ধারণ করেছে বিস্তৃর্ণ ফসলের মাঠ। শীষ বের হয়ে দানা না হতেই দুধ অবস্থায় শুকিয়ে যাচ্ছে। কীটনাশক প্রয়োগেও কোনো প্রতিকার খুঁজে পাচ্ছেন না কৃষক। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা।

বিরলের ধামইর ইউপির দারইল গ্রামের কৃষক মমতাজ আলী মাষ্টার জানান, চার একর জমিতে এবার ব্রি-৩৪ আবাদ করেছেন। কিন্তু শেষ সময়ে এসে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে ক্ষেত। কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে না পেয়ে স্থানীয় দোকান থেকে কীটনাশক সংগ্রহ করে স্প্রে করেছেন। কিন্তু এর আগেই অনেক ফসল আক্রান্ত হয়ে পড়ায় তা আর কোনো কাজে আসছে না।

একই এলাকার কৃষক শুশিল চন্দ্র রায় জানান, তিনিও চার বিঘা জমিতে এই ধান চাষ করেছেন। কিন্তু ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এলাকায় আগে একজন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এলেও এখন কে দায়িত্বে আছেন তা জানেন না।

একই এলাকার কৃষক আলহাজ জয়নাল আবেদীন জানান, পাঁচ একর জমির মধ্যে হঠাৎ ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ায় তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

খানসামা উপজেলার কৃষক আমিনুল ইসলাম জানান, তিনিও ব্রি-৩৪ ধানের চাষ করে বিপাকে পড়েছেন। কৃষি বিভাগ ধানের শীষ বের হওয়ার আগেই কীটনাশক স্প্রে করতে বলেছিলেন। কিন্তু তা করা হয়নি। ফলে ব্লাস্ট রোগ থেকে ধানক্ষেত বাঁচাতে পারেননি। চিরিরবন্দর উপজেলার নানিয়া টিকর এলাকার কৃষক মোকলেছুর রহমান জানান, এই এলাকায় ব্যাপক হারে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। কোনোভাবেই তা রোধ করা যাচ্ছে না। যারাই ব্রি-৩৪ ধান চাষ করেছেন সবারই কপাল পুড়েছে।

কৃষি বিভাগের সূত্র জানিয়েছে, বিপিএইচ এবং ব্লাস্ট রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রায় ৬০ হাজার লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শ প্রদান অব্যাহত রয়েছে।

দিনাজপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তৌহিদুল ইকবাল জানান, ব্রি-৩৪ ধানে ব্লাস্ট রোগের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। আমরা কৃষকদেরকে শীষ বের হওয়ার আগে প্রভেক্স ও সিনাইল নামে দুটি কীটনাশক মিশিয়ে স্প্রে করার পরামর্শ দিয়ে ছিলাম। যারা করেছে তাদের ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেনি।

তিনি আরও জানান, ব্রি-৩৪ ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণের কারণ বীজ। এই ধানের বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। আগামীতে এই ধান তুলে নেয়া হবে।

 
Electronic Paper