রাঙ্গারা নিক্ষিপ্ত হবে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে
খোলা কাগজ ডেস্ক
🕐 ১০:০৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
খুনি এরশাদের নির্দেশে যখন নূর হোসেনকে হত্যা করা হয় মসিউর রহমান রাঙ্গা তখন রংপুরের সবচেয়ে বড় বাংলা মদ ও তাড়ির ভাটিতে ফুট ফরমায়েশ খেটে জীবিকা নির্বাহ করত। অবশ্য পরে ওই তাড়ির ভাটির মালিক লালা বাবু রাঙ্গাকে তার দোকানের ম্যানেজার বানিয়েছিল। লালা বাবুর ছেলে কনকের সঙ্গে দোস্তি পাতিয়ে লালা বাবুর বাড়িতে ওঠাবসা করার সুযোগ নিয়ে এই বেইমান রাঙ্গা হিন্দু ধর্মাবলম্বী লালা বাবুর মেয়েকে জোর করে ভাগিয়ে বিয়ে করে।
বিয়ের পর কিছুদিন এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে রংপুর বাসস্ট্যান্ডে চাঁদা কালেক্টর/চেইন মাস্টারের কাজ নিয়ে প্রতিদিন নানাজনের নির্দেশে টাকার বিনিময়ে মারামারি-মাস্তানি করে বেরিয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের ছিঁচকে সন্ত্রাসী রাঙ্গা একপর্যায়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে মেয়র শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর হাতে পায়ে ধরে ব্যাংক লোনের ব্যবস্থা এবং তার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিজেই একটা বাস কিনে মালিক বনে যায়। আর এখান থেকেই শুরু হয় রাঙ্গার উত্থান। রংপুরের ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে শ্রমিক নেতা আকরামকে হত্যার ভেতর দিয়ে দ্রুতই লাইম লাইটে চলে আসে রাঙ্গা। আর সেই সঙ্গে এই বেইমান বিশ্বাসঘাতক যে ঝন্টুর টাকায় বাস কিনে মালিক বনে গেল সেই শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুকেই মালিক সমিতি থেকে উৎখাত করে পুরো রংপুর বাসস্ট্যান্ডের দখল নিজের হাতে নিয়ে নেয়।
এরশাদ আমলে রাঙ্গা বিএনপির নেতাদের পিছনে পিছনে ঘুরে বেড়ালেও এরশাদের পতনের পরে রংপুরে এরশাদের আঞ্চলিক প্রভাব দেখে এরশাদকে মামা বানিয়ে জাতীয় পার্টি করা শুরু করে দেয়। বন্ধুবান্ধব জিজ্ঞাসা করলে রাঙ্গা তখন প্রকাশ্যেই এরশাদ-জিনাত মোশারফের নানা মুখরোচক গল্প বলে হাসাহাসি করত। এহেন রাঙ্গার নিজের নানা অপকর্ম গু-ামি চুরি চামারি নারী লিপ্সার নানান কাহিনী রংপুরে সর্বজনবিদিত। মন্ত্রী হয়ে কয়েক শত মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে সব টাকাই গায়েব করে দিয়েছে। রাঙ্গাদের বর্তমান বাড়ি দক্ষিণ গুপ্তপাড়ায় হলেও আসল বাড়ি লালমনিরহাটের কালিগঞ্জের চামটা ইউনিয়নে। রাঙ্গার আপন বাপ ও চাচারা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রাজাকার ছিল বলে স্বাধীনতার পর এদের পরিবার জনগণের গণপিটুনির ভয়ে গ্রামে যেতে পারত না।
সেই রাঙ্গা আজ ফ্যাসিবাদের পদলেহন করে মামা এরশাদের হাত ধরে মন্ত্রী পর্যন্ত হয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান করতে দ্বিধা করছে না। নিজ দলের কর্মী নূর হোসেনের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে আজ যে ফ্যাসিবাদ বিনা ভোটে মধ্যরাতের নৈশ অভিযানে নিজেদের নির্বাচিত দেখাচ্ছে সেই প্রহসনের ভোটে রাঙ্গার নেতা খুনি এরশাদ ছিলেন অন্যতম সহযোগী। ফলে ফ্যাসিবাদের কণ্ঠ লগ্না হয়ে নূর হোসেনের নামে আজেবাজে কথা বলা কেবল রাঙ্গাদের মতো ‘লাফাঙ্গা সারমেয়’দের মুখেই শোভা পায়। কারণ রাঙ্গারা জানে না ইতিহাসের সোনালি পাতায় নূর হোসেনদের নাম সর্বদাই আলোক রশ্মির উজ্জ্বল ছটায় জ্বলজ্বল করেই জ্বলতে থাকবে। অপরদিকে রাঙ্গার নেতা এরশাদ একজন অবৈধ ক্ষমতা দখলদার খুনি জান্তা হিসেবে ইতিহাসের আঁস্তাকুড়েই পড়ে থাকবে। এটাই ইতিহাসের নির্মম বিচার। এর অন্যথা হওয়ার নয়।
আনোয়ার মুকুল
রাজনীতিবিদ
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228