ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সাতক্ষীরা-পাইকগাছায় ক্ষতি ৬৭ কোটি টাকা

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল

সাতক্ষীরা ও পাইকগাছা প্রতিনিধি
🕐 ৯:০৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৯

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে সাতক্ষীরা তিন উপজেলায় পাঁচ হাজার ১৭টি ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। যার বাজার মূল্য ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এছাড়া খুলনার পাইকগাছায় পাঁচ হাজার ১০০ হেক্টর আয়তনের এক হাজার ১৮৫টি চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে ৫৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার প্রান্তিক চাষিরা এখন সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে। কিভাবে শোধ হবে ব্যাংক ঋণ। সরকারিভাবে সহায়তা না পেলে ক্ষতির মুখে পড়বেন এসব চিংড়ি চাষিরা।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে শ্যামনগর, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলায় পাঁচ হাজার ১৭টি চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে। এর মধ্যে শ্যামনগর উপজেলায় তিন হাজার ২৬৫টি, আশাশুনি উপজেলায় এক হাজার ৩১৭টি ও কালীগঞ্জ উপজেলায় ৪৩৫টি মৎস্য ঘের একাকার হয়ে গেছে। 

এসব মৎস্য ঘের থেকে বাগদা, গলদা ও বিভিন্ন প্রজাতির সাদা মাছ চলে গেছে ৪১৪ টন। যার বাজার মূল্য ১০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।

শ্যামনগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন সাগর জানান, শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের তা-বে চিংড়ি চাষিরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বিভিন্ন ব্যাংক ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে তারা মাছ চাষ করে থাকেন।

শ্যামনগরের গাবুরা চকবারা গ্রামের ফিরোজ, আবুল হোসেন, পদ্মপুকুর ইউনিয়নের পাতাখালী গ্রামে হাবিবুর রহমান ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের দাতিনাখালি গ্রামে আব্দুর রহিমসহ অনেক মৎস্য চাষি জানান, তারা পুরোপুরি মাছ চাষের ওপর নির্ভরশীল। ঘের ভেসে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। মহাজনের ঋণের চিন্তায় হতাশ তারা।

অন্যদিকে, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে লণ্ডভণ্ড খুলনার পাইকগাছায় প্রায় ৫৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে ৪৮ হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে জেলা প্রশাসন কয়রা, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, পাইকগাছা ও রূপসা উপজেলায় আট লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যা মাথাপিছু তিন টাকারও কম। চাল বরাদ্দ দিলেও এখনও ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে তা পৌঁছায়নি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস জানান, পাঁচ হাজার ১০০ হেক্টর আয়তনের এক হাজার ১৮৫টি চিংড়ি ও সাদা মাছের ঘের প্লাবিত হয়ে ৫৭ কোটি টাকার মৎস্য সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, চলতি মৌসুমে ১৬ হাজার ৯৬৫ হেক্টরের আমন ক্ষেতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে দুই হাজার ৭০০ হেক্টর আমন ধান, সবজি ৫৬ হেক্টর ও নয় হেক্টর পান ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে।

ইউপি চেয়েরম্যানদের মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কথা বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, ঝড়ে এক হাজার ৫২০ আধাপাকা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও ছয় হাজারের বেশি ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতি হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দার জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।

 
Electronic Paper