বুলবুলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
সতর্কতার বিকল্প নেই
সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
দুর্যোগ মোকাবেলায় দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হয়। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেহেতু ভৌগোলিকভাবেই দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে টিকে রয়েছে, সেহেতু আমাদের সচেতনতা ও প্রস্তুতির ব্যাপারে ঘাটতি থাকা কোনো নাগরিকেরই কাম্য নয়। কেননা দুর্যোগের যত ধকল ও ধ্বংসযজ্ঞ তা ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষকেই আক্রান্ত করে। এর রেশ ধরে যে দুঃসহ স্মৃতিগুলো উৎসারিত হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতের জন্য সব সময় সতর্ক থাকার কোনো বিকল্প নেই। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতের ফলে এ বিষয়টি আবারও সামনে চলে এসেছে।
পত্রিকায় প্রকাশ, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ১৬ জেলায় ৭২ হাজার ২১২ টন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ২৬৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলে ধরতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। গত রোববার ভোররাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় ঘূর্ণিঝড় বুলবুল।
জেলাগুলো হচ্ছে- খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নড়াইল, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং লক্ষ্মীপুর। ঝড়ের পরপরই ফসলের ক্ষতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া না গেলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ১৬ জেলার দুই লাখ ৮৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল, যার মধ্যে রোপা আমন, খেসারি ও পানের বরজসহ রবি শস্য ও শীতকালীন সবজি রয়েছে।
১৬ জেলার ১০৩ উপজেলায় এ ঝড়ের প্রভাব পড়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ দুই লাখ ৮৯ হাজার ছয় হেক্টর (মোট আবাদকৃত জমির ১৪%) এবং ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৩৬ হেক্টর (মোট আক্রান্ত জমির ৮%)। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ৫০ হাজার ৫০৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আক্রান্ত ফসলগুলো হচ্ছে রোপা আমন, শীতকালীন সবজি, সরিষা, খেসারি, মসুর ও পান। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ ৭২ হাজার ২১২ টন। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির মধ্যে রোপা আমনের দুই লাখ ৩৩ হাজার ৫৭৮ হেক্টর, সরিষার এক হাজার ৪৭৬ হেক্টর, শীতকালীন সবজির ১৬ হাজার ৮৮৪ হেক্টর, খেসারির ৩১ হাজার ৮৮ হেক্টর, মসুরের ১৯৫ হেক্টর, পানের দুই হাজার ৬৬৩ হেক্টর এবং অন্যান্য তিন হাজার ১২৬ হেক্টর জমি রয়েছে।
অনুমান করা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ৪৭ কোটি টাকা রোপা আমনে এবং ৭৯ কোটি টাকা সবজিতে ক্ষতি হবে। তবে ঘূর্ণিঝড়ে ফসলের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে বাজারে তেমন প্রভাব পড়বে না এটি কৃষিমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলা হলেও এমন বাস্তবতায় দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয়। এজন্য দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কৃষি পুনর্বাসনের পাশাপাশি বাজার মনিটরিং এবং ভবিষ্যতে দুর্যোগের ফলে ক্ষয়ক্ষতি যেন আরও কম হয় সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228