ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

ফেনী নদীর পানি চুক্তি বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা

ফেনী প্রতিনিধি
🕐 ৪:৫৬ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৮, ২০১৯

ফেনী নদী থেকে চুক্তির অতিরিক্ত পানি প্রত্যাহারের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে পরিবেশের ওপর। ফেনী নদী পানির উপর মুহুরী, কহুয়া, কালিদাশ পাহাড়িকাসহ অসংখ্য ছড়া ও খালের অস্বিত্ব নির্ভর করছে। শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রত্যাহার ও বর্ষাকালে ভারত একতরফা বাংলাদেশে পানি ছেড়ে দিয়ে কৃত্রিম বন্যা সৃষ্টিসহ নানা দুর্যোগের কারণে প্রতি বছর মুহুরী সেচ প্রকল্পের ইরি বোরো আবাদ আশঙ্কাজনক হারে কমছে বলে মনে করেন নদী বিশেষজ্ঞরা।

ফেনী নদী থেকে চুক্তির পানি বা চুক্তির অতিরিক্ত পানি ভারত প্রত্যাহার করে নিলে ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে শুষ্ক মৌসুমে ইরি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গড়ে ওঠা দেশের ষষ্ঠ বৃহত্তম মুহুরী সেচ প্রকল্পের আওতায় ফেনী নদী, মহুরী-কহুয়া নদীর তীরবর্তী জমিতে আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কাও করছেন তারা।

ফেনী নদীর পানি ভারতকে দেওয়ার কারণে সমগ্র অঞ্চলে দেখা দিতে পারে মরুময়তা, ধ্বংস হবে প্রকৃতি ও প্রতিবেশ-পরিবেশ। বন্ধ হয়ে যেতে পারে সাগর মোহনায় মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকার পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনার দ্বার। কারণ ফেনী নদীই মুহুরী নদীর ৮০ ভাগ পানির উৎস বলে মনে করেন নদী বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে, ফেনী নদীর উৎস পরিদর্শনে আসা ভাসানী অনুসারী পরিষদের বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি সম্পাদিত সমঝোতা চুক্তি এবং অবৈধভাবে ৩৬টি পাম্পের মাধ্যমে পানি উত্তোলন বিষয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য কর্মসূচি নির্ধারণ করেন গত মঙ্গলবার। তবে নদীর উৎসস্থল ফেনীছড়া, তাইন্দংছড়া এবং আচালংছড়ার মিলিতস্থান ফেনী নদী পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশি বাধায় ফিরে আসেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের বিশেষজ্ঞরা। পরে তারা ফেনীর একাডেমি এলাকার প্রিন্স কমিউনিটির সেন্টারে মতবিনিময় সভা করতে যান। তবে প্রশাসনিক বাধায় সেটাও করতে পারেননি। একপর্যায়ে বাইরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।

এ সময় ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘পার্শ্ববর্তী দেশের জনগণের খাবার পানির জন্য সম্পাদিত চুক্তির বিপক্ষে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থান নয়। কিন্তু ফেনী নদীর পানি যদি অন্য কাজে লাগানো হয়, অথবা বন্ধুদের স্বার্থরক্ষা করতে গিয়ে আমাদের হাজার হাজার জেলে, কৃষক অসহায় হয়ে পড়ে, তাহলে ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার চুক্তিতে দেশীয় স্বার্থ সংরক্ষিত হয়নি বলে প্রতিয়মান হবে।’

পানি বিশেষজ্ঞ ও জল পরিবেশ ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান ড. ম. ইনামুল হক বলেন, ‘সরেজমিন আমরা দেখেছি ফেনী নদী অবস্থানগত কারণে পানি ব্যবহারে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা জরুরি। তাই সম্পাদিত চুক্তি উত্তম পন্থা। কিন্তু প্রশ্ন হলো অবৈধ প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন ৭০ কিউসেক পানি প্রত্যাহার নিয়ে আমাদের উদ্বেগ রয়েছে। আমাদের উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে বিজিবির মাধ্যমে জানা যায়, ভারত ৩৬টি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন পাম্পের মাধ্যমে ৭০ কিউসেকের বেশি পানি কোনো রকম সমঝোতা ছাড়াই উত্তোলন করে যাচ্ছে।’

 
Electronic Paper