শিক্ষকের নির্যাতনে ছাত্রের মৃত্যু
মাদারীপুর প্রতিনিধি
🕐 ১০:২১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৬, ২০১৯
মাদারীপুর সদর উপজেলায় টাকা চুরির অভিযোগে শিক্ষকের নির্যাতনে হাসিব মাতুব্বর নামে (১০) এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের গাছাবাড়ীয়া জামিয়া কারিমিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যার অভিযোগে শিক্ষক ইলিয়াছ মোল্লাকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত হাসিব সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের শ্রীনাদী এলাকার ভ্যানচালক আনোয়ার মাতুব্বরের ছেলে।
হাসিববের পরিবারের অভিযোগ, গত রোববার ৫০০ টাকার চুরি অভিযোগে দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র হাসিবকে নির্যাতন করেন ওই মাদ্রসার শিক্ষক ইউসুফ মোল্লা। পরে হাসিব মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যায়। গতকাল সকালে তার বাবা-মা মাদ্রাসায় দিয়ে গেলে আবারও হাসিবকে নির্যাতন করা হলে গুরুতর আহত হয়। বিকালে কয়েকজন শিক্ষক নির্যাতনের কথা ধামাচাপা দিতে হাসিবের মুখে বিষ ঢেলে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসিবের মৃত্যু হয়। এরপর হাসপাতালে নিয়ে আসা মাদ্রাসার সব শিক্ষক পালিয়ে গেলেও আবুল বাসারকে আটক করে পুলিশ।
হাসিবের বাবা আনোয়ার মাতুব্বর জানান, আমার ছেলেকে মাত্র ৫০০ টাকা চুরির অভিযোগে নির্যাতন করে তারা মেরে ফেলেছে। আবার তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ছেলের মুখে বিষ দিয়ে হত্যা করল।
মাদ্রাসার পাশে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করা কালাম ফকির জানান, আমি ওই মাদ্রাসার পাশে একটি বাড়িতে কাজ করছিলাম। হঠাৎ দেখি একটি ছেলে মাদ্রাসার বাইরে ছটপট করছে। আমি গিয়ে সবাইকে ডাক দিলে মাদ্রাসার শিক্ষকসহ ছাত্ররা বের হয়ে আসে এবং ওই সময় তাকে একটি ভ্যানে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক ইউসুফ আলী মোল্লা জানান, বাড়ি থেকে যে টাকা মাদ্রাসার জন্য দেওয়া হতো সব টাকা বিভিন্নভাবে খরচ করে ফেলত হাসিব। সে আমার টাকা চুরি করায় আমি তাকে কয়েকটি আঘাত করেছিলাম। এরপর সে পালিয়ে বাড়ি চলে যায়। গতকাল সকালে তার মা এসে আবার আমাদের মাদ্রাসায় দিয়ে গেলে আমরা রাখতে চাইনি। তারপর অনুরোধ করে রেখে যায়। এরপর আমি ও মাইনুল ইসলাম স্যার ১টার আগেই কালকিনি চলে আসি ওয়াজ মাহফিল শুনতে। সন্ধ্যায় জানতে পারি হাসিব হাসপাতালে মারা গেছে। বুধবার তার সঙ্গে কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমি চাই সঠিক ঘটনা বের হোক।
গাছাবাড়ীয়া জামিয়া কারিমিয়া মাদ্রাসার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিব হাওলাদারকে একাধিকবার ফোন দিয়ে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে। মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সওগাতুল আলম জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে নিয়ে এসেছি। মামলা হলে আমরা তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেব।