ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | ৫ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

সিরিজ জয়ের স্বপ্ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ০৫, ২০১৯

দিল্লি থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ দল পা রেখেছে রাজকোটে। এবার তাদের লক্ষ্য, ভারতের মাটিতে প্রথমবারের মতো সিরিজ জেতা। দলের তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম আশাবাদী, কঠিন এ কাজটা তারা সফলভাবে করতে পারবেন।

গত সেপ্টেম্বরে অভিষেকে চমকে দিয়েছিলেন। কাল পাওয়ার প্লের পরের ওভারে এসেই আমিনুলের আরেক চমক। সপ্তম ওভারের তৃতীয় বলটি ভালো জায়গায় পড়ে টার্ন করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। ব্যাটসম্যান কে এল রাহুল এতটা টার্ন আশা করেননি। তালগোল পাকিয়ে কাভারে মাহমুদউল্লাহর হাতে তুলে দেন সহজ ক্যাচ। শ্রেয়াস আয়ার উইকেটে এসে আমিনুলকে চার-ছক্কার চাপে ফেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু ১১তম ওভারে ভয়ঙ্কর আয়ারকেই বাউন্ডারি লাইনে মোহাম্মদ নাঈম শেখের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করেন। আমিনুল যখন অসাধারণ বোলিং করছিলেন, অরুণ জেটলির প্রেসবক্সে ভারতীয় সাংবাদিকরা বারবার জানতে চাইছিলেন এ লেগ স্পিনারের আদ্যোপান্ত।

গত সেপ্টেম্বরে অভিষেকেই ভালো করেছিলেন তরুণ ‘লেগি’। কিন্তু দুর্বল প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে ছিল বলে অনেকে হয়তো সেভাবে গুরুত্ব দেননি তাকে। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে ৩ ওভারে ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে আমিনুল বুঝিয়েছেন, শক্তিশালী দলের বিপক্ষেও আলো ছড়াতে জানেন।

আমিনুলের কাছে দুটি ম্যাচই সমান তাৎপর্যপূর্ণ, ‘অভিষেক ম্যাচ তো অভিষেক ম্যাচই! অভিষেক ম্যাচে ভালো করাটা খুব জরুরি ছিল। আর ভারত অনেক বড় দল। তাদের সঙ্গে ভালো করাটা ভীষণ আনন্দের।’

এই আনন্দ বেড়ে যাবে দ্বিগুণ, যদি বাংলাদেশ রাজকোটেই নিষ্পত্তি করে ফেলে টি-২০ সিরিজটা। কিন্তু সেটি কি সম্ভব? আমিনুল আশা দিচ্ছেন, ‘হ্যাঁ, আমাদের লক্ষ্য ম্যাচ ধরে ধরে এগোনো। পরের ম্যাচটা ভালো খেলতে পারলে আশা করি সিরিজ জিতব।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেই ভালো করেছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটে এমন উদাহরণ কম নয়। আমিনুল নিজের প্রথম দুই আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভালো করেছেন। কিন্তু সামনে নিশ্চয়ই তাকে অনেক বিশ্লেষণ করে খেলতে নামবে ভারতীয় দল।

১৯ বছর বয়সী লেগ স্পিনার হিসেবে এই চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি, ‘ভালো দলের সঙ্গে খেলতে গেলে সব সময়ই চ্যালেঞ্জ থাকে। আমাদের কোচ ডেনিয়েল ভেট্টোরি আছে। তার সঙ্গে আলাপ করব, কীভাবে এগোনো যায়, আরও উন্নতি করা যায়।’

দিল্লিতে সিরিজের প্রথম টি-২০তে আমিনুলের লক্ষ্য ছিল একটাই- ব্যাটসম্যান বুঝে বোলিং করা। সেটিতে সফলও হয়েছেন। সেটির ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান রাজকোটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০তেও। জয়ের নায়ক মুশফিকুর রহিমের ভাবনাও তাই, ‘আমরা আন্ডারডগ হিসেবে এখানে এসেছি। আমাদের হেড কোচকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই। গত কিছুদিন আমাদের ক্রিকেটে যা চলছিল সেখান থেকে তিনি যেভাবে দলকে একত্রিত করতে পেরেছেন, তাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। এখন সিরিজ জিততে চাই।’

‘তরুণরা খুব ভালো করেছে। তারা মেধাবী, ভালো খেলার সামর্থ্য আছে। আমি বলব, বোলিংটা খুব ভালো হয়েছে। এ দিন মাহমুদুল্লাহ ভাইয়ের সিদ্ধান্তগুলো ভালো ছিল। যখন যাকে বোলিংয়ে আনা দারকার ছিল, সেটাই করেছেন। তবে ১৪৯ রানের টার্গেট কম নয়। এই পিচে রান তাড়া করা সহজ ছিল না; বিশেষ করে ভারতের স্পিনারদের বিপক্ষে। আমি ও সৌম্য সেটা করতে পেরেছি।’

বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা দেশ ছাড়ার আগে বলে এসেছিলেন, সাকিবের জন্য ভারতে ভালো খেলতে চান তারা। শুরুটা প্রত্যাশামতোই হলো। এবার সিরিজ জিতে বিজয় উদযাপন করার ইচ্ছা মুশফিকদের।

নিজে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতলেও কৃতিত্বের বড় একটা অংশ বোলারদেরই দিলেন মুশফিক। তার মতে, ভারতীয় ইনিংসে বোলারদের অসাধারণ পারফরম্যান্সের ম্যাচের গতিবিধি নিজেদের পক্ষে রাখা গিয়েছিল। ‘এটা আমাদের জন্য খুব বড় একটি মুহূর্ত। আমরা কখনো ভারতের বিপক্ষে টি-২০তে জিতিনি। এবার পেরেছি। আমরা বেশ কিছু নিয়মিত খেলোয়াড়কে ছাড়া খেলেছি। কিন্তু তরুণরা তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেছে। বিশেষ করে বোলাররা ভারতের এমন উইকেটে যেভাবে বোলিং করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। ওরাই ম্যাচটা সেটআপ করে দিয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘লক্ষ্যটা তাড়া করার মতোই ছিল। উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ ছিল না। নতুন বলে এবং তাদের ভালোমানের স্পিনারের বিপক্ষে রান তোলা কঠিন ছিল। তবুও বলব দলের প্রত্যেকে নিজের সামর্থ্য দেখিয়েছে। আমাদের হারানোর কিছু ছিল না। এই পুরো সফরে আমাদের হারানোর কিছু নেই। কিন্তু আজকের জয় আমাদের ভিন্ন চিন্তা করাবে। হয়তো আমরা নতুন মোমেন্টাম পাব।’

 
Electronic Paper