ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪ | ১০ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

তাজউদ্দীনের পর আর কোনো নেতা জন্মায়নি

অজয় দাশগুপ্ত
🕐 ৯:৪৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ০৩, ২০১৯

বাবা ছিলেন খুব সাধারণ মানুষ। চাকরি সংসার নিয়ে ব্যস্ত তার রাজনীতি নিয়ে কোন আগ্রহ ছিল না। মা বলেছিল, গান্ধীজীকে মেরে ফেলাটা বাবা মানতে পারেনি। এক দিন এক রাত না খেয়ে অনশন করেছিলেন নিজের মতো।

আর যেটা দেখেছি, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুব বিষণ্ন ও হতাশ। কিন্তু যে রাতে ইনি ও এঁদের হত্যা করা হলো, বাবাকে দেখলাম উদ্বিগ্ন আর বিচলিত। এ ঘর ও ঘর করে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে। বারবার বলছিল, এ দেশে আর কোন দিন নেতা জন্মাবে না। তার মতো মানুষকে মেরে ফেলার অভিশাপ এই জাতিকে ক্ষমা করবে না। এখন বুঝি, সাধারণ মানুষের অসাধারণ দৃষ্টি কাকে বলে। তাদের হত্যা করার পর এই দেশে আর কোন নেতা জন্মেছে?

চার জাতীয় নেতাকে জেলখানায় নির্মমভাবে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল কে জানেন? তাদের দলের নেতা, মাত্র সাড়ে তিন বছর আগেও যে ছিল তাদের বন্ধু! সেই বিশ্বাসঘাতক বেইমান মোশতাকের বুক কাঁপেনি জেলখানার গেইট খুলে দেওয়ার আদেশ দিতে। অথচ তার হাত তখন খালি। দল তাকে একঘরে করে দিয়েছিল।

বঙ্গবন্ধুকে ভুল বুঝিয়ে রাখা লোকদের কারণে তিনি এক দিনের জন্যও সময় পাননি মুক্তিযুদ্ধের কথা বলার। ইতিহাস জানানোর।

’৭১ সালে কলকাতায় একদিকে যেমন মুক্তির জন্য লড়াই আরেক দিকে আওয়ামী লীগের কিছু নেতা সে অভয়ারণ্যে মজা নিতে ব্যস্ত। তাদের বিলাস আনন্দ নারীসঙ্গ ছিল কাহিনী। ইনি তখন পরিবারের সাথে না থেকে অফিসের মেঝেতে ঘুমাতেন। কোনো বিশেষ বাহিনীর পরিবর্তে মুক্তিবাহিনীর নামে যুদ্ধ পরিচালনা করার প্রতিজ্ঞা তাকে কতবার বিপদে ফেলেছে। নিজেদের লোকরাই মাথা গরম করে বন্দুক নিয়ে গেছে মেরে ফেলার জন্য। পারেনি। মারলো স্বাধীন দেশের কিছু খুনি জওয়ান।

গত বৃহস্পতিবার সারা দিন ঢাকায় ছিলাম। রাত দুপুরে ফ্লাইট বলে কোথাও বের হইনি। তবে একটি তীর্থস্থান মিস করিনি। বিষণণ্ন অপরাহ্নে সাঁই সাঁই করে ছুটে যাচ্ছিল আলীশান সব গাড়ি। চোখ খুললেই সুরম্য আকাশচুম্বী অট্টালিকা।

দুনিয়ার যে কোনো শহরের তুলনায় লেভিস চাকচিক্যময়। দেশের লোকজন কি জানেন বনানীর ঘাসে ঢাকা ছোট কবরটিতে শুয়ে আছেন এ দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। যার ত্যাগ ও বিচক্ষণতা ছাড়া এ দেশ স্বাধীন হতো না। সারা জীবন সাদা হাফ হাতা শার্টের এই মানুষটির সাথে শেষ হয়ে গেছে শুভ্রতা ও স্বচ্ছতার রাজনীতি। সালাম চার জাতীয় নেতা। শ্রদ্ধাপ্রিয় তাজউদ্দীন আহমদ।

অজয় দাশগুপ্ত
প্রবাসী সাংবাদিক

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper