পাহাড়ের গুহা ডাকাতদের লুকানোর জায়গা
চট্টগ্রাম ব্যুরো
🕐 ১০:৫৮ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
একটি ডাকাত দলের ১১ জনকে গ্রেফতারের তথ্য দিয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ বলেছে, ‘মহাসড়কে ডাকাতির পর তারা সীতাকুণ্ডের পাহাড়ের গুহায় লুকিয়ে থাকত। যে কারণে তাদের ধরা যাচ্ছিল না।’
শনিবার ভোরে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার টাইগার পাস এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর দুপুরে নগরীর মোমিন রোডে মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনারের (দক্ষিণ) কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত জানানো হয়।
গ্রেফতার ১১ জন হলো- সালাউদ্দিন (২৪), রাজু (১৯), ইসরাফিল হোসেন আলম (২২), আকবর হোসেন (২২), সেলিম (২৮), টিটু (২৫), ইয়াসিন (২৩), ফজর আলী (৩৫), মো. সুমন (২৫), রহিম প্রকাশ হৃদয় (২২) এবং পলাশ হোসেন (২৫)।
সংবাদ সম্মেলনে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মেহেদী হাসান বলেন, ‘এদের দলনেতা মো. সালাউদ্দিন আড়াই বছর জেলে ছিল। এরপর দুই মাস আগে বেরিয়ে আবার ডাকাতির কাজে জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম নগরী, সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই উপজেলা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, ফেনী, কুমিল্লা, লাকসাম ও নোয়াখালী এলাকায় এরা ডাকাতি করে। ডাকাতি শেষে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ের গুহায় চলে যায়। যে কারণে তাদের সন্ধান পাওয়া যেত না।’
তিনি জানান, দুই মাস আগে গ্রেফতার অন্য একটি ডাকাত দলের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই ডাকাত দলটিকে অনুসরণ করে পুলিশ। কমিশনার মেহেদী হাসান বলেন, ‘শনিবার (গতকাল) ভোরে পিকআপ ও প্রাইভেট কার নিয়ে ডাকাতি প্রস্তুতির সময় টাইগার পাস এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে দুটি দেশীয় এলজি, দুটি কার্তুজ, দুটি টিপ ছোরা, ছয়টি কিরিচ উদ্ধার করা হয়। এ সময় একটি পিকআপ ও একটি প্রাইভেট কারও জব্দ করা হয়। এ দলের সবাই নগরীর আকবর শাহ থানা এবং নগরীর উপকণ্ঠের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাসিন্দা।’
চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মহসিন জানান, ‘নগরীতে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত তারা দল বেঁধে ছিনতাইও করত। ভোরের দিকে বাস ও ট্রেনে নগরীতে আসা যাত্রীরা ছিল তাদের লক্ষ্যবস্তু। যাত্রীদের রিকশা বা সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকে ছোরার ভয় দেখিয়ে সব ছিনিয়ে নিত। কারও কাছে পাসপোর্ট পেলে ছিনিয়ে নিয়ে পরে বিকাশ নাম্বারের মাধ্যমে টাকা আদায় করত। অধিকাংশ সময়ই টাকা আদায়ের পর পাসপোর্ট ও মূল্যবান কাগজপত্র ফেরত দিত না।’
এরা আগে গত ১৪ এবং ১৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের টাইগারপাস মোড়ে প্রাইভেট কার ব্যবহার করে এরকম ছিনতাইয়ের দুটি ঘটনা ঘটে। ওই দুই ঘটনার সূত্রে পুলিশ এই দলটিকে খুঁজতে থাকে। পুলিশ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘এরা গাড়ি নিয়ে মহাসড়কে ঘুরতো। চলন্ত বাস দাঁড় করিয়ে ডাকাতি করার কথাও জানিয়েছে তারা। পাশাপাশি সড়ক সংলগ্ন যেসব দোকানের শাটার বা ঘরের তালা ভাঙতে পারবে বলে মনে হতো গভীর রাতে সেগুলো ভেঙে ডাকাতি করত। তাদের সঙ্গে ঘর ও দোকার ভাঙার সরঞ্জাম থাকত।’