শুক নদীতে মাছ ধরা উৎসব
হাসান বাপ্পি, ঠাকুরগাঁও
🕐 ৯:২৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২০, ২০১৯
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ঠাকুরগাঁওয়ের শুক নদীতে মাছ শিকার উৎসবে মেতেছেন নানা শ্রেণি-পেশার কয়েক হাজার মানুষ। কারও হাতে পলো, কারও হাতে চাবিজাল, খেয়াজাল, টানাজাল বা ছেঁকাজাল ও মাছ রাখার খালুই। আবার অনেকে এসেছেন উৎসব দেখতে।
গতকাল শনিবার সকালে এক বছর পর মাছ ধরার জন্য খুলে দেওয়া হয় উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝামাঝি শুক নদীর উপর নির্মিত বুড়ি বাঁধ। ৫০ একর জমি নিয়ে নদীটিতে গড়ে তোলা হয় মাছের অভয়ারণ্য। বছরজুড়ে সেখানে কোনো মাছ মারার অনুমতি থাকে না। শুধু একটা দিনই উৎসবমুখ মাছ শিকারের আয়োজন করে প্রশাসন।
জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে ১৯৫১ সালে শুরু হয় এই বাঁধ নির্মাণের কাজ। পরে ১৯৫৭ সালের দিকে শেষ হয়ে ১৯৭৮ সালের দিকে সেচ কার্যক্রম শুরু হয় এখানে। এরপর থেকেই শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলের কৃষি জমির সেচ সুবিধার জন্য সদর উপজেলার আকচা ও চিলারং ইউনিয়নের মাঝ সীমানায় শুক নদীতে বুড়ির বাঁধ নামের একটি জলকপাট নির্মাণ করা হয়।
এই জলকপাটে আটকে থাকা পানিতে প্রতিবছর জেলা মৎস্য অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা অবমুক্ত করে থাকে। এ পোনাগুলো যাতে কেউ শিকার করতে না পারে তাই এর দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করা হয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে। এরপর থেকেই প্রতিবার শীতের শুরুতেই এসব মাছ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় শিকার করার জন্য। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে বুড়ির বাঁধ এলাকায় মাছ ধরার উৎসব চলে আসছে।
সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়ন থেকে মাছ ধরতে আসা সামিউল আলম বলেন, আগের দিন রাতেই এখানে এসেছি। শুনেছিলাম এখানে মাছ মারা হয়। প্রতিবার নাকি এই উৎসবটা হয়। তাই এবারে এসেছি। পুঁটি মাছ, দেশীয় গুঁড়া মাছ, রুইসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ জালে আটকা পড়েছে। আমার মতো আরও অনেকেই রাতেই এসেছেন এখানে।
ঠাকুরগাঁও আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মণ জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারও আমাদের এই ইউনিয়নে মাছ ধরার উৎসবটি করা হয়েছে। এখানে শুধু ইউনিয়নবাসীরাই নয় বরং ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই এসেছেন। কেউ মাছ ধরতে আসেন কেউবা আসেন মাছ কিনতে আবার অনেকেই আসেন মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে।