ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

এ কোন সংকটে বুয়েট

ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা চাই না

সম্পাদকীয়-১
🕐 ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০১৯

আর যাই হোক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অন্তত ঝামলার বাইরে থাকা উচিত। দেশ পরিচালনায় নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি যেখান থেকে তৈরি হবে সে জায়গায় নেতিবাচক কর্মকাণ্ড প্রত্যাশিত নয়। অথচ কিছুদিন পরপরই গণমাধ্যমের খবরে উঠে আসে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনিয়ম-অব্যবস্থাপনার চিত্র। কিছু ক্ষেত্রে মারাত্মক ঘটনাও ঘটে। এ কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম ক্ষুণ্ন হয় দেশের। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বর্তমান অবস্থা মোটেও সুখকর নয়। রাজনৈতিক ক্ষমতা নিয়ে অত্যাচার করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হত্যার ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। আর অত্যাচারের প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ চলায় এখন বিপাকে স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠান।

অত্যাচার-নির্যাতনের যে তথ্য আবরার হত্যাকাণ্ডের পর প্রকাশ পেয়েছে তা শুনে পিলে চমকে যাচ্ছে সবার। খোলা কাগজে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বুয়েটের শিক্ষক, বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীরা মনে করছেন, আবরার হত্যার মধ্য দিয়ে বুয়েটের যে ভাবমূর্তির সংকট তৈরি হলো এর রেশ কাটতে দীর্ঘকাল কেটে যাবে। বুয়েটের এ অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। বছরের পর বছর ধরে উপাচার্য, প্রশাসন, শিক্ষকদের সামনেই অধপতনের দিকে এগিয়েছে বুয়েট। সবাই-ই স্রোতের দিকে গা-ভাসিয়ে দিয়ে নির্লিপ্ততার চূড়ান্ত পারদর্শিতা দেখিয়েছেন। কেউ কেউ রাজনৈতিক ক্ষমতার ছত্রছায়ায় থেকে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন। আবার কেউ কেউ ক্ষীণ প্রতিবাদ করেছেন।

সবার জানা, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ও র‌্যাগিংয়ের মতো অপসংস্কৃতির কারণে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় জর্জরিত। নাম না বললেও দেশের শীর্ষ স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই এসব বেশি চলে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো বুয়েটেও ক্ষমতাসীনদের লেজুড়বৃত্তিপ্রধান ছাত্ররাজনীতির চর্চা হতো। আবরার হত্যার পরই তা খোলাসা হয়েছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্ররাজনীতি হুমকির মুখে পড়েছে।

অতীব সত্য হলো- দখলদারিত্ব, সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, একক আধিপত্য গত কয়েক দশকে ছাত্ররাজনীতির মূল প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে যা এখনো চলমান। এই প্রবণতা ঠেকানো না গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুদিন ফিরবে না। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সরকার, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং শিক্ষক-অভিভাবকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গোছানো থাকলেই দেশের ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে। কেননা শিক্ষার্থীরাই দেশের অগ্রগতির কর্ণধার।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বুয়েটের দিকে তাকিয়ে আছে সবাই। হত্যার বিচারসহ ক্যাম্পাসের সব কালিমা দূর করে এখন ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। আর এই দায়িত্ব নিতে হবে বুয়েট প্রশাসনকেই। আমাদের কথা হলো, সব ধরনের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড থেকে বুয়েটসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দূরে রাখতে হবে। খুন-খারাবি, অনিয়ম-দুর্নীতি, অত্যাচার-নির্যাতন বন্ধ করে একটি নির্মল পরিবেশ তৈরি এবং তা স্থায়ী করতে হবে। বুয়েটসহ দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্বচ্ছ এবং শক্ত ভূমিকা পালন করলেই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে।

 

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ


Warning: Invalid argument supplied for foreach() in /home/www/kholakagojbd.com/post/details-page.php on line 228
Electronic Paper